বিশ্বমানের করা হবে দেশের নার্সিং খাতকে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশের নার্সিং খাতকে বিশ্বমানের করা হবে উলেস্নখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৯৫ হাজার শিক্ষিত নার্স আছেন, যারা বিশ্বের যেকোনো দেশের স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রাখতে পারবে। তাদের আরও বেশি দক্ষ ও বিশ্বমানের করতে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এজন্য দক্ষ প্রশিক্ষকও দরকার হবে আমাদের। এক্ষেত্রে কানাডা সরকার বাংলাদেশে যে উন্নতমানের টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার করার উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার এইচ ই লিলি নিকোলাসের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান। এছাড়া কানাডা হাইকমিশনের হেড অব কো অপারেশন অ্যান্ড কাউন্সিলর এবং ভারপ্রাপ্ত রাজনৈতিক কাউন্সিলর মিসেস সিওভান কের উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে কানাডা হাইকমিশনার কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ও উচ্চতর মানের নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করাসহ স্বাস্থ্যখাত সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
কানাডায় বেশি বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যাদের ভালো চিকিৎসার জন্য কানাডায় দক্ষ নার্স, চিকিৎসক ও টেকনোলজিস্ট দরকার। কানাডা হাইকমিশনার ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে প্রয়োজন সংখ্যক নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে এই নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ হতে হবে। এজন্য কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একটি উন্নত ও বিশ্বমানের নার্স টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন কানাডা হাইকমিশনার লিলি নিকোলাস।
এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ নার্স, চিকিৎসক রয়েছে বলে কানাডা হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় কানাডা হাইকমিশনারের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও নার্সিং পেশাকে যুগোপযোগী করতে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের উদ্যোগের পাশাপাশি কানাডা সরকারের সহায়তা পেলে বাংলাদেশের নার্সিং সেক্টরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে।
আলোচনায় কানাডা হাইকমিশনার বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষ করে প্রাইভেট মেডিকেলে অধিক সংখ্যক সিজারিয়ান বেবি জন্ম নেয় বলে উলেস্নখ করেন। একইসঙ্গে তিনি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা, গ্রামের মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিন সহজলভ্য করার প্রসঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশের প্রায় চার হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গ্রামে থাকা মেয়েদের বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণসহ গ্রামীণ মায়েদের জন্য ইনস্টিটিউশনাল ডেলিভারি সিস্টেম সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বাজেট মাত্র ১ শতাংশ এবং কানাডার স্বাস্থ্যখাতে বাজেট ১২ শতাংশ। বাংলাদেশ এত কম বাজেটে এত বিরাট সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারবে কি না এবং ভবিষ্যতে কানাডা সরকারের কোনো ধরনের সহায়তা লাগবে কি না সে ব্যাপারে কানাডা হাইকমিশনার জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আরও কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আরেকবার বৈঠকে বসবার আমন্ত্রণ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এরপর কানাডা হাইকমিশনার ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী উভয়েই পরবর্তীতে আরও একবার সাক্ষাতের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন।