ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

কয়েদিদের তৈরি পণ্যে মুগ্ধ ক্রেতা-দর্শনার্থী

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ জেলের স্টলে শোভা পাচ্ছে কয়েদিদের তৈরি পণ্য
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে শোভা পেয়েছে নানা ধরনের পণ্য। এর মধ্যে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে কয়েদিদের তৈরি নানা পণ্য। বাংলাদেশ জেলের স্টলে শোভা পাচ্ছে এসব বাহারি পণ্য। এ স্টলে প্রতিদিন ভিড় করছেন দূর-দূরান্ত থেকে আগত অসংখ্য ক্রেতা-দর্শনার্থী। সোমবার দুপুরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার কারাপণ্য স্টলটিতে সরেজমিন এমন চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, স্টলের প্রবেশমুখে লেখা 'কারাপণ্য, বাংলাদেশ জেল'। স্টলটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ের পেছনে লেখাটিরও হয়তো ভূমিকা রয়েছে। এ লেখা দেখেই অনেকে কৌতূহল নিয়ে স্টলটিতে প্রবেশ করেন। কয়েদিদের তৈরি নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়িসহ নানা পণ্য ঘুরে ঘুরে দেখেন তারা। অনেকে আবার কিনছেন পছন্দের পণ্যটি। জানা গেছে, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ ও ২, মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, নারায়ণগঞ্জ কারাগার, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার, ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, কুমিলস্না কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অধিকাংশ কারাগারের বন্দিদের হাতের তৈরি প্রায় চার শতাধিক পণ্য এ স্টলে বিক্রি হচ্ছে। স্টলটিতে লুঙ্গি ৩১০-৩৯৫ টাকা, জামদানি শাড়ি ৬-৭ হাজার টাকা, মনিপুরী শাড়ি ১৮০০- ৩২২০ টাকা, গামছা ৯০-১৬০ টাকা, বেড শিড ৩০০-৩৫০০ টাকা, মোড়া ৫৫০-১৬০০ টাকা, কাঠের পিড়ি ৪৫০ টাকা, দোলনা ১১০০-১৮০০ টাকা, বড় সিংহাসন ৫৫০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্টলটিতে আসা ক্রেতা আমেনা বেগম জানান, শুনেছি জেলখানায় থাকা কয়েদিদের হাতে নানা পণ্য তৈরি হয়। মেলায় না আসায় এর আগে দেখার সুযোগ হয়নি। তাই স্টলটিতে এসে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ঘুরে ঘুরে দেখছি এবং কয়েকটি পণ্য কিনেছি। মেলায় ঘুরতে আসা সিদ্ধিরগঞ্জের মর্জিনা আক্তার জানান, গত বছরও বাণিজ্য মেলায় এসেছি। তবে প্রতিবারের মতো এবারো আমার প্রধান আকর্ষণ কারাবন্দিদের হাতে তৈরি নানা পণ্য। আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে জামদানি শাড়ি। পছন্দ হলে এখান থেকে একটি শাড়ি কিনে নিয়ে যাবো। স্টলটিতে দায়িত্বে থাকা ডেপুটি জেলার রাকিব শেখ বলেন, অন্যান্যবারের মতো এবারও ভালো সাড়া পাচ্ছি। জামদানি শাড়ি ও নকশি কাঁথার চাহিদা তুলনামূলক বেশি। গতবার ৪০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছিল। আশা করছি, এবার ৫০ লাখ টাকার চেয়ে বেশি বিক্রি হবে। স্থায়ী ভেনু্যতে তৃতীয়বারের মতো এ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করেছে। রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো (ইপিবি) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মেলায় এবার যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে উত্তরা বা মতিঝিল থেকে যারা মেলায় আসবেন তারা মেট্রোরেলে এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন সেই সুবিধা রাখা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা পর্যন্ত বিআরটিসি ও কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসের ডেডিকেটেড সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন এ বাস সার্ভিস চালু থাকবে। ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা এদিকে মেলায় আসা ক্রেতাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ও নানা অনিয়মের অভিযোগে গত ১৬ দিনে ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী। তিনি বলেন, খাবারের দাম বেশি রাখা, দোকানে মূল্যতালিকা না রাখা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্না করা, মিথ্যা লোভনীয় অফার দেওয়া, খাবারের মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভোক্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে এ জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।