পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান নাফিজ সরাফাতের পদত্যাগ
প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
সংকট পিছু ছাড়ছে না পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক)। এবার ব্যাংকটির চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত পদত্যাগ করেছেন। বুধবার তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বুধবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকারদের বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ তথ্য জানান।
পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত শেয়ারহোল্ডার হিসেবে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম পদ্মা ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
২০১৩ সালে ফারমার্স ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়। যাত্রার তিন বছরেই ধুঁকতে থাকা ফারমার্স ব্যাংকে ব্যাপক অনিয়মের জন্য ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতাদের দায়ী করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
২০১৬ সালে শত শত কোটি টাকা অনিয়ম দেখে ফারমার্স ব্যাংকে পর্যবেক্ষক দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। চাপের মুখে গত বছরের শুরুতে চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে বাধ্য হন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সমস্য মহীউদ্দিন খান আলমগীর।
ফারমার্স ব্যাংকের ৬০ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিক এখন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ব্যাংক ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের কারণে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে সরকারের হস্তক্ষেপে ডুবতে থাকা এই ব্যাংকটির বেশিরভাগ শেয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী এবং আইসিবি কিনে নেয়। পাশাপাশি রেইস এসেট ম্যানেজমেন্ট বিনিয়োগ করে। রেইসের পক্ষ থেকে থেকে চৌধুরী নাসিফ সরাফাত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন।
জানা গেছে, প্রথমে আগ্রহ নিয়ে রেইস ব্যাংকটি নিয়ে ফারমার্স থেকে পদ্মা ব্যাংক হয়। পরবর্তীতে ব্যাংকটি তারা পরিচালনা করতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। এক পর্যায়ে ব্যাংকটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার প্রস্তাব দেয়। পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি নাকচ করে দেয়।
পদ্মা ব্যাংক দুটি প্রস্তাব দিয়েছিল- যার মধ্যে ছিল একীভূত হওয়া ও দেশের বাইরে থেকে বিনিয়োগ আনা। তাদের বাইরে থেকে বিনিয়োগ আনার প্রস্তাবে রাজি হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগে ব্যাংকটির নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। নানা অনিয়ম আর ঋণ কেলেঙ্কারির মুখে চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় ব্যাংকটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন ঘটে ২০১৭ সালে। এর পরের বছর ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
নাজুক অবস্থা থেকে পদ্মা ব্যাংককে উদ্ধার করতে ৭১৫ কোটি টাকার মূলধন জোগায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি ব্যাংক। যা মোট মূলধনের ৬৬ শতাংশ। পদ্মা ব্যাংক অর্থের অভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হিমশিম খাওয়ায় সরকারের কাছে নতুন আবেদন করে। আবেদনে সরকারি ব্যাংকের আমানতের বিপরীতে শেয়ার ইসু্য করার অনুমতি চায় বা সরকারি কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রস্তাব দেয় ব্যাংকটি।