রমজানে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হবে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
রমজানকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে মন্তব্য করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, সব পণ্যের দাম যেন স্বাভাবিক থাকে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টিসিবির পণ্যের মতো রমজানে মুরগি, ডিম, মাংস ও দুধ বিক্রির বিষয়েও ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আয়োজিত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ খাত : সমস্যা ও সম্ভাবনা শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, গেস্নাবাল টেলিভিশনের এডিটর সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ডিবিসি নিউজের এডিটর প্রণব সাহা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আব্দুর রহিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর গোলাম রব্বানী।
ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রতি আহ্বান থাকবে মানুষের জন্য কিছু করুন। লাভ কম করুন। বাজারে মাছ, মুরগি, ডিম, দুধের সরবরাহ থাকলেও দাম বেশি। আমাদের
উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নৈতিক অধঃপতনও বাড়ছে। উৎপাদনকারীদের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার অধিকার আছে। আবার ক্রেতাদেরও সঠিক দামে পণ্য পাওয়ার অধিকার আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লোভ-লালসা এমন পর্যায়ে চলে গেছে আমরা শুধু চাই আর চাই। এই আরও চাওয়াগুলো দুনিয়াতে কেউ ভোগ করে যেতে পারে না। এসব পিঁপড়ায় খায়। সুইস ব্যাংকে যারা টাকা রাখে অনেক সময় তাদের স্বাক্ষর মিলে না। এতে টাকা আর তোলা হয় না। ফাঁকা পকেটে ফিরে আসতে হয়। আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গীকারে কাজের গুরুত্বকে সামনে নিয়ে আসতে হবে। আর শুল্ক কতটুকু কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বক্তব্যে সচিব সেলিম উদ্দিন বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে মেডিসিন ও ফিডের দাম কমাতে হবে। দেশে দুধে ঘাটতি থাকলেও মাংস, ডিম ও মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আর দেশে ভ্যাকসিনেশনে বিপস্নব ঘটে গেছে। আমাদের দেশের যেসব শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয় তাদের কৃষি ও মৎস্য খাতে প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠালে তারা বেশি উপকৃত হবে। মন্ত্রণালয়ের কোথায় অন্যায় ও অনিয়ম হচ্ছে তা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোলাম রব্বানী বলেন, ভারত দুধ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। তারা বছরে ২ হাজার ৫০০ বিলিয়ন টন দুধ উৎপাদন করে থাকে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় চীন, চতুর্থ পাকিস্তান, পঞ্চম ব্রাজিল ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে রাশিয়া। তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ড বিশ্বের ৪ শতাংশ দুধ উৎপাদন করে ৪০ শতাংশ বাজার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দেশে ২০১৩-১৪ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত গত ১০ বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে ৭৯ দশমিক ৭৬ লাখ টন। আর একই সময়ে মাংসের উৎপাদন বেড়েছে ৪১ দশমিক ৮৯ লাখ টন। বাংলাদেশে প্রাণী খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ছিল ৭৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা।
খাতের সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের জেনেটিক রিসোর্স নেই, মিল্ক লিঙ্কেজ মার্কেট সমস্যা, উৎপাদন ব্যয় অনেক। ভালোমানের গাভির অভাব রয়েছে। দুগ্ধজাত পণ্য যারা রপ্তানি করেন সেখানে আন্তর্জাতিকমান নেই।