ঢাকার বাড্ডায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃতু্যর ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন না আসায় রিট মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুলস্নার হাইকোর্ট বেঞ্চ ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে রুল শুনানির জন্য আগামী রোববার নতুন ধার্য করে দিয়েছে।
রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট শিশু আয়ানের মৃতু্যর ঘটনা তদন্ত করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে
নির্দেশ দেয়।
পাশাপাশি দেশের সব অনুমোদিত ও অননুমোদিত হাসপাতাল-ক্লিনিকের তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে আয়ানের মৃতু্যর অভিযোগে তার পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত।
রিটকারী আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু প্রতিবেদন জমা না পড়ায় শুনানির জন্য রোববার নতুন তারিখ রাখা হয়েছে।
পাঁচ বছর বয়সি আয়ানকে খতনা করানোর জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার সাঁতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। অ্যানেন্থেসিয়া দেওয়ার পর আর জ্ঞান ফেরেনি তার। পরে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত ৭ জানুয়ারি সেখানেই মৃতু্য হয় শিশুটির।
আয়ানের বাবা শামীম আহামেদ পরে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সাইদ সাব্বির আহমেদ, সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক তাসনুভা মাহজাবিন, অজ্ঞাতনামা পরিচালকসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয় সেখানে।
পরে জানা যায়, যথাযথ নিবন্ধন ছাড়াই চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। এ কারণে রোববার ওই হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আয়ানের মৃতু্যর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
আয়ানের মৃতু্যর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয় সেখানে। পাশাপাশি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল এবং নতুন রোগী ভর্তি না করার নির্দেশনা চেয়ে একটি সম্পূরক আবেদন করে রিট আবেদনকারীপক্ষ।
এ রিট মামলায় পরে শিশু আয়ানের বাবা পক্ষভুক্ত হন এবং পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে এ মামলায়।