রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
জরিপ করবে যুক্তরাষ্ট্র

সিসার বিষক্রিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশের শিশুরা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সিসার বিষক্রিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশের শিশুরা

ইউনাইটেড এস্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সামান্থা পাওয়ার ইউনিসেফের ২০২৪ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা জরিপ করার জন্য ১.১ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেছেন। সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে এ ঘোষণা দেন তিনি।

বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক মিডিয়া নোটে জানায়, সিসার বিষক্রিয়ায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে শিশুরা। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে প্রতি দুই শিশুর একজন আক্রান্ত হয় এই বিষক্রিয়ায়। ব্যাপকভাবে অবহেলিত অথচ সমাধানযোগ্য এ সংকট মোকাবিলায় আরও সহায়তা ও পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাওয়ার।

বাংলাদেশে ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান বলেন, সিসার সংস্পর্শ বাংলাদেশের শিশুদের কতটা আক্রান্ত করে তা পরিমাপ করা এবং সারাদেশে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের এ বিষাক্ত পদার্থ থেকে রক্ষার পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাপী সিসার বিষক্রিয়ায় প্রতি বছর কমপক্ষে ১.৬ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়, যা এইচআইভি এবং ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃতু্যর চেয়েও বেশি। এসব মৃতু্যর বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটে। সিসা একটি শক্তিশালী নিউরোটক্সিন, কোনো

মাত্রাতেই এর সংস্পর্শে আসা নিরাপদ নয়। সিসার বিষক্রিয়া মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, শিক্ষা অর্জনকে ব্যাহত করতে পারে এবং ভবিষ্যতের উৎপাদনশীলতা কমাতে পারে। ধনী এবং দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষাগত ব্যবধান এক পঞ্চমাংশ বাড়াতে ও বিশ্ব অর্থনীতি কমপক্ষে এক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে সিসার সংস্পর্শে আসার কারণে। তা সত্ত্বেও, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে সিসা প্রশমনের প্রচেষ্টায় দাতাদের অর্থায়নের পরিমাণ প্রতি বছর প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার।

নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলো যাতে রং, মসলা এবং প্রসাধনীর মতো ভোগ্যপণ্যে সিসার ব্যবহার কমাতে বাধ্যতামূলক নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে পারে, তার সমর্থনে একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগের পরামর্শ দেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাওয়ার। শুধু এই পদক্ষেপগুলোই প্রতি বছর বাঁচাতে পারে কয়েক হাজার জীবন, প্রতিরোধ করতে পারে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধকতা এবং লাখ লাখ শিশুর শিক্ষাগত ফলাফল উন্নত করতে পারে। উলেস্নখযোগ্যভাবে ভোগ্যপণ্য থেকে সিসা অপসারণের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা ব্যয়সাশ্রয়ী ও সীমিত তহবিল দিয়ে অনেক জীবন বাঁচানোর একটি বড় সুযোগকে প্রতিফলিত করে।

এ লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পাওয়ার আরও ঘোষণা করে যে ইউএসএআইডি সিসাযুক্ত রং নির্মূল করার জন্য বৈশ্বিক জোটে যোগ দেবে। এ জোটের অংশীদারিত্ব প্রায় ৪০টি দেশে সিসাযুক্ত রঙের ওপর আইনত বাধ্যতামূলক নিয়ন্ত্রণকে সমর্থন করছে। ইউএসএআইডি এই জোটে যোগদানকারী প্রথম দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সংস্থা, যেখানে এটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য সরকারি সংস্থার সদস্য যেমন ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) এবং এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির (ইপিএ) অংশীদার হবে।

ইউএসএআইডির প্রচেষ্টাগুলো সিসামুক্ত ভবিষ্যতের জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট হ্যারিসের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। যুক্তরাষ্ট্রে এবং সারাবিশ্বের সব মানুষকে সিসার সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করা বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের অগ্রাধিকার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে