ভুল চিকিৎসায় মৃতু্য
আলোচিত আসামি মিজানুর রহমান গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকের্ যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে বরগুনায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মা ও নবজাতকের মৃতু্যর ঘটনার বহুল আলোচিত আসামি মিজানুর রহমান। তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ২০ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরের্ যাব-২ এর একটি দল ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে গ্রেপ্তার হয় মিজানুর রহমান (৪০)। তার পিতার নাম মৃত আব্দুল খালেক হাওলাদার। বাড়ি বরগুনা জেলার বামনা থানা এলাকায়।
র্
যাব-২ এর মিডিয়া বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি শিহাব করিম এমন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে যায়যায়দিনকে জানান, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি বেলা ৩টায় বরগুনা জেলার বামনা থানাধীন এলাকায় সন্তান সম্ভবা এক নারীর প্রসব ব্যথা ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে তার পিতা ও স্বামী তাকে নিয়ে যান ওই থানাধীন ৪ নম্বর ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ডৌয়াতলা সুন্দরবন ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক সবুজ কুমার দাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রম্নত অপারেশনের পরামর্শ দেন।
র্
যাব কর্মকর্তা গ্রেপ্তার আসামির বরাত দিয়ে জানান, ২০ হাজার টাকা দিলে অভিজ্ঞ সার্জন দিয়ে প্রসূতি মায়ের অপারেশনসহ সম্পূর্ণ চিকিৎসা করানো হবে বলে জানায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। প্রসূতি নারীর পিতা তাৎক্ষণিকভাবে ১০ হাজার টাকা ক্লিনিকে জমা দেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে অপারেশন শুরু হয়। অনভিজ্ঞ সার্জন ডাক্তার সবুজ কুমার দাশ ক্লিনিকের স্টাফদের নিয়ে অপারেশন করেন। দীর্ঘসময় পরও মেয়ের কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। তারা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে অপারেশন থিয়েটার খোলার জন্য বলেন। কর্তৃপক্ষ জানান অপারেশন চলছে। ততক্ষণে মা ও বাচ্চা মারা গেছে।
র্
যাব কর্মকর্তা জানান, স্বজনদের রোশানলের মুখে আড়াই ঘণ্টা পর অপারেশন থিয়েটারের দরজা খোলে। তার আগেই ডাক্তার পেট থেকে বের করা বাচ্চাকে আবার মায়ের পেটে দিয়ে সেলাই করে কসটেপ মেরে দেয়। রাত ১১টায় রোগীর হার্টবিট বেড়ে গেছে এবং তাকে দ্রম্নত বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যেতে বলে।
চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কথামতো অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগীকে বরিশালের উদ্দেশে নিয়ে রওনা হয়। ভান্ডারিয়া এলাকায় পৌঁছানোর পর রোগীর আর কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যায় না। দ্রম্নত তাকে ভর্তি করা হয় ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রোগী ও পেটের বাচ্চা কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে মারা গেছে বলে মতামত দেন।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে গত ১৬ জানুয়ারি বরগুনা জেলার বামনা থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৬। ঘটনাটি দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তার আসামি ক্লিনিকে কর্মরত। তিনি অপারেশনে অংশ নিয়েছিলেন। মামলার এজাহারনামীয় আসামি গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান। তাকে বামনা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।