শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

সাজা ভোগের পরও দেশের কারাগারে ১৫৭ বিদেশি

হাইকোর্টে প্রতিবেদন
যাযাদি ডেস্ক
  ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
সাজা ভোগের পরও দেশের কারাগারে ১৫৭ বিদেশি

সাজা ভোগের পরও দেশের বিভিন্ন কারাগারে ১৫৭ জন বিদেশি বন্দি মুক্তি ও প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের এবং একজন করে পাকিস্তান ও নেপালের নাগরিক রয়েছেন। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে গত ১৫ জানুয়ারির এক আদেশ পাওয়ার পর কারা অধিদপ্তর এই প্রতিবেদন পাঠাল।

ডেপুটি অ্যটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত জানান, কারা অধিদপ্তর থেকে হাইকোর্টে এ প্রতিবেদন পাঠানো হয়। আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন প্রতিবেদনটি হলফনামা করে দাখিল করবে রাষ্ট্রপক্ষ।

প্রতিবেদনের বরাতে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, সাজা খাটা হলেও অন্য দেশের নাগরিক হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে এসব ব্যক্তিদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হয়।

তিনি বলেন, 'সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের মুক্তি দেওয়াও সম্ভব নয়।'

কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের সাধারণত অনুপ্রবেশের দায়ে 'দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২', 'পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২' এবং 'মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন' এর মামলায় সাজা দেওয়া হয়।

সাজা ভোগ করা বিদেশি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। ১৫ জানুয়ারি ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনায় ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরার কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে আটক করে বিজিবি। সেদিনই তার নামে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা করেন বিজিবির হাবিলদার মো. রশিদ প্রধান।

তদন্তের পর ওই বছরের ৪ এপ্রিল অভিযোগপত্র জমা দেন শ্রীমঙ্গল থানার এসআই কামরুল হাসান। অভিযোগপত্র জমার দিনই ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪২ ধারা ও দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম মিজবাহ উর রহমান। সেইসঙ্গে অনুপ্রবেশের দোষ স্বীকার করায় সেদিনই গোবিন্দকে ২ মাস ১০ দিনের কারাদন্ড দেন বিচারক।

রায়ে বলা হয়, আসামি মামলা সংশ্লিষ্টতায় আগে হাজতবাস করে থাকলে সেই সময় সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। সে অনুযায়ী রায় ঘোষণা পর্যন্ত গোবিন্দ উড়িয়া চার দিন বেশি হাজত বাস করেন।

আসামি যেহেতু ইতোমধ্যে সাজার মেয়াদ ভোগ করে ফেলেছেন, সেজন্য তাকে ভারতে ফেরত পাঠাতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিন্তু ওই রায়ের পর দুই বছর পার হলেও ওই ভারতীয় নাগরিক কারাগার থেকে মুক্তি পাননি জানিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ বছরের ১১ জানুয়ারি রিট আবেদন করেন আইনজীবী বিভূতি তরফদার।

তার রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ সাজা শেষ হওয়ার পরও কারাগারে থাকা বিদেশি বন্দিদের তালিকা চায়।

এ বিষয়ে সেদিন একটি রুলও জারি করেন আদালত। সাজা ভোগ করার পরও কারাবন্দি রাখা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, আদালতের নির্দেশ মতো গোবিন্দ উড়িয়াসহ সাজাপ্রাপ্ত বিদেশি কারাবন্দিদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করার নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইন ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে