বিরল ভালোবাসা!

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ঘুঘু পাখিটি বাসা বেঁধেছিল লাউগাছের মাচার এক কোণে। সেই বাসা নজরে পড়ে গ্রামের এক কিশোরের-(১৬)। শিকারের জন্য এয়ারগানের গুলি ছোড়ে সে ঘুঘুর বাসা লক্ষ্য করে। এ সময় মা ঘুঘু পাখা দিয়ে আগলে রেখেছিল তার দুটি ছানা। এয়ারগানের শব্দে বাবা পাখিটি উড়ে গেলেও গুলি থেকে রক্ষা পায়নি মা পাখিটি। শনিবার সকাল ৮টায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের হুসনাবাদ হিন্দুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘুঘু শিকারের বিষয়টি টের পেয়ে গ্রামের কয়েকজন এগিয়ে আসে কিশোরকে থামাতে। পরে মা-হারা ঘুঘুছানা দুটি উদ্ধার করে তারা স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন 'পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থা'র লোকজনের হাতে তুলে দিয়েছেন। গ্রামের তিনজন নারী বলেন, ভোর হলেই ঘুঘুর ডাক তারা শুনতে পান। শুধু ঘুঘু নয়, এই শীত মৌসুমে আরও অনেক ধরনের পাখি তাদের গ্রামে বিভিন্ন গাছের ডালে বাসা বাঁধে। আজকের এ ঘটনা গ্রামের মানুষের মনে দাগ কেটেছে। তারা চান, পাখি শিকার বন্ধ হোক। হুসনাবাদ হিন্দুপাড়া গ্রামের দুইজন কৃষক বলেন, তাদের গ্রামের ১৬ ও ১০ বছরের দুইজন এয়ারগান দিয়ে শনিবার সকালে পাখি শিকারে বের হয়েছিল। লাউগাছের মাচার কাছে তারা ঘুঘুর বাসাটি খুঁজে পায়। পাশে ছিল বাবা ঘুঘু। শীতের সকালে মা ঘুঘু পাখা দিয়ে দুটি ছানা আগলে রেখেছিল। আর বাবা ঘুঘুটি পাশে বসে ছিল। এয়ারগানের ছোড়া গুলিতে মারা যায় মা, আর উড়ে প্রাণে বাঁচে বাবা ঘুঘু। এরপর ওই দুই শিশু-কিশোর ছানা দুটি নিয়ে যেতে চায়। তাদের বাধা দেয় গ্রামের কিছু যুবক। একপর্যায়ে কিশোররা মারা যাওয়া মা ঘুঘুকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। শেরপুরের পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সোহাগ রায় বলেন, মা-হারা ওই দুটি ঘুঘুছানা এখন তার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ছানা দুটি ওড়ার মতো বড় হলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। পাখি শিকার করতে আসা ওই দুই শিশুর বাবার কাছে তিনি গিয়েছিলেন। তাদের বাবা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বলেন, এয়ারগান দিয়ে এভাবে পাখি শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ। শেরপুর উপজেলায় আগে অহরহ এয়ারগান দিয়ে পাখির শিকার চলত। তাদের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের কারণে অনেক এলাকায় পাখি শিকার বন্ধ হয়েছে। এয়ারগান দিয়ে পাখি শিকার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের এগিয়ে আসা জরুরি।