জিয়ার জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় মঈন খান
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে
প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ভোটাধিকার হরণকারী এই আওয়ামী লীগ সরকার খুব বেশিদিন আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এই সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি 'রাজপথে' থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ২৮ অক্টোবরের পর এই প্রথম আলোচনা সভার মতো কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
সভায় বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, কঠিন সংগ্রামে নেমেছেন। সরকার গুলি করবে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের বুকে বল, অদম্য সাহস আছে। এই সংগ্রামের শেষ পর্যন্ত দেখে নিতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এখন কথা বলা সময় নয়, এখন কাজের সময়। জনগণের শক্তি দিয়ে বর্তমান বাকশাল-২ সরকারের বন্দুক, বুলেট, গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস এবং জলকামানসহ সব শক্তিকে পরাভূত করতে হবে। এটাই হচ্ছে আজকের প্রতিজ্ঞা।
সাধারণ মানুষকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা হতাশ না। হতাশ হলে লড়াই চলত না। আসুন লড়াইয়ের ময়দানে। এই লড়াই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের ঋণ পরিশোধের জন্য। এই ময়দানে বিজয় অবশ্যম্ভাবী। এই সরকারের খুব শিগগির পতন হবে। লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। জনগণের বিজয় হতেই হবে।
জিয়াউর রহমানের প্রতি স্মৃতিচারণ করে মঈন খান বলেন, জিয়াউর রহমান যে অর্জন করেছিলেন, সেই অর্জনের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেখে সবার উপর একটি দায়িত্ব বর্তেছে। সেই দায়িত্ব হচ্ছে- জীবন বাজি রেখে দেশে আবার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে। সেটা করতে পারলে দেশের মানুষের যে চাওয়া তা ফিরিয়ে দিতে পারবো। সেই প্রতিশ্রম্নতি নিয়ে সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে মঈন খান বলেন, ৩০০ আসনের সংসদে ৬০০ সংসদ সদস্য করে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এসেছে। ৭ জানুয়ারি দেশের ১২ কোটি ভোটার এবং ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে বর্জন করে তাদের মুখে কলঙ্ক লেপন করেছে। এটা শুধু বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর কথা নয়। আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং জাতিসংঘের বক্তব্য। শুধু তাই নয়, বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থা, সুশীল সমাজের সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো একত্রিত হয়ে পাতানো ও ডামি নির্বাচনকে একটা ভুয়া, নাটক ও প্রহসনের নির্বাচন বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে অনেক দিন লড়াই হয়েছে। অনেকে বিশ্বাসই করতে চায় নাই যে, এরশাদের পতন সম্ভব। কিন্তু দেখা গেল ঠিকই পতন হয়েছে। এবারও হবে ইনশালস্নাহ। পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়ে গেছে। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে, এদেশের গণতন্ত্রের প্রত্যেকটা সূচক নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। রক্ত দিয়ে স্বাধীন দেশের মানুষ এটা পছন্দ করে না, সহ্য করবে না। এটা চলবে না, চলতে পারে না। কাজেই স্বৈরশাসনের শাসনের পতন এবং গণতন্ত্রকামী জনতার বিজয় অনিবার্য। এই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে এবং বিজয় হতে হবে।
\হনেতা-কর্মীদের উদ্দেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আজকে উঠে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। তারা এখন নতুন মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে আছেন। কোনো দেশের (ভারত) তাবেদারি করবে না বিএনপি। তারা বন্ধু হিসেবে যদি এদেশের জনগণের সঙ্গে থাকে তাহলেই তাকে বন্ধু হিসেবে মেনে নেব, অন্যথায় নয়। কিন্তু এখন তারা বাংলাদেশকে তাদের অধীনে নিতে চাচ্ছে। আমরা আর এদেশকে পরাধীন হতে দেব না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুলস্নাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সভায় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।