শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১
রাতভর নির্যাতন

রাসেল হত্যার ১২ আসামি গ্রেপ্তার

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
  ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
রাসেল হত্যার ১২ আসামি গ্রেপ্তার

কেরানীগঞ্জের তেলঘাট এলাকায় মোহাম্মদ রাসেলকে রাতভর নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাব্বিসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, রাসেল হত্যায় জড়িতরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। তারা দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গ্রেপ্তাররা হলেন- শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাছের উদ্দিনের ছেলে আফতাব উদ্দিন রাব্বি (২৪), আলমগীর ওরফে ঠান্ডু (৩৯), মো. আমির হোসেন (৩৮), মো. শিপন (৩১), দেলোয়ার দেলু (৩৭), মো. রনি (৩৫), অনিক হাসান হিরা (৩০), মো. সজীব (৩৬), ফিরোজ (৩১), রাজীব আহমেদ (৩৫), মো. মাহফুজুর রহমান (৩৬), মো. রতন শেখ (২৮)।

বুধবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার তেলঘাটে রাব্বির ব্যক্তিগত অফিসে গত ১০ জানুয়ারি, রাতে রাসেলকে লোক মারফত ডাকা হয়। রাব্বির ডাকে রাসেল তার অফিসে গেলে রাব্বির নেতৃত্বে রাতভর রাসেলকে প্রচন্ড নির্যাতন করা হয়। কাঁচি দিয়ে রাসেলের মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে ১০ তারিখ দিনগত রাত ২টার দিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাসেলকে কয়েকজন মিলে বস্তায় ভরে বাসায় নিয়ে যায়। সেখানেও রাসেলকে চিকিৎসকের কাছে নিতে বাধা দেয়। আহত অবস্থায় দীর্ঘসময় থাকার কারণে সেখানেই রাসেলের মৃতু্য হয়। পরের দিন রাসেলের স্ত্রী মিডফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন।

আলোচিত এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত রাসেলের বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় রাব্বিসহ ১৩ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, রাসেল আসামি রাব্বির বন্ধু ছিলেন। তেলঘাট এলাকায় রাসেল বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে রাব্বির নামে চাঁদা তুলতেন। সেই টাকা রাব্বি ও তাদের অন্যান্য সহযোগীদের না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন রাসেল। মূলত আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে রাব্বি ও তার সহযোগীরা রাসেলের ওপর ক্ষুদ্ধ হন এবং রাসেলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। হতাকান্ডে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে রাব্বি তার রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে তেলঘাট এলাকায় নীরব চাঁদাবাজি করতেন। এ ধরনের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ীদের বলবেন তারা কেউ চাঁদা দেবেন না। কেউ চাঁদা দাবি করলে পুলিশকে জানাবেন।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের রাব্বির অফিসে যাতায়াত ছিল। কীভাবে মানুষ পুলিশের ওপর আস্থা রাখবে এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, কোনো পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে একজনকে থানা থেকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম, কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাহবুব আলম উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে