দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা

শরীয়তপুরে পাঁচ আসামির মৃতু্যদন্ডের রায়

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া পাঁচ আসামিকে মৃতু্যদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের রায়ে মৃতু্যদন্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- নিজাম বালী (৪৫), মোহাম্মদ আলী (৩৫), ওমর ফারুক ব্যাপারী (২৪), আল আমীন ব্যাপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোলস্না (২১)। তারা ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ শীতলকাঠী এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ মামলায় অন্য তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ডামুড্যা উপজেলার ৫৫ বছর বয়সি এক নারী। ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের বড় নওগাঁ এলাকার একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে হাত ভাঙা ও মাথায় আঘাতের ক্ষত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ওই নারীর ছোট ভাই বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উলেস্নখ করে ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে পুলিশ। বাকি আসামিরা চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পায়। পরে ২৮ এপ্রিল ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আসামি নিজাম বালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। অন্য দুই আসামি ইব্রাহিম ও আল আমিন পলাতক আছে। তাদের মধ্যে ওমর ফারুক জামিনে গিয়ে পলাতক। এ ঘটনায় পরবর্তী সময় পুলিশ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের বিচারক ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার অপরাধে পাঁচজনকে মৃতু্যদন্ড দেন এবং তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। নিহত নারীর ছেলে বলেন, 'আমার মাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত পাঁচজনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। আমরা রায়ে খুশি হয়েছি। তবে সরকারের কাছে একটাই দাবি, দ্রম্নত সময়ের মধ্যে যেন এই রায় কার্যকর করা হয়। পলাতক তিনজনকে দ্রম্নত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।' শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের সরকারি কৌঁসুলি সানাল মিয়া বলেন, 'এটি একটি আলোচিত হত্যাকান্ডের রায়। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।' আসামিপক্ষের আইনজীবী নাসরিন আক্তার জানান, মামলায় তারা ন্যায়বিচার পাননি। তারা উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করবেন।