দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সংসদ সদস্য হিসেবে জয়ী হতে দেখল দেশ। এর আগে এত বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়ের নজির নেই। ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতে সংসদে গিয়েছিলেন।
বিএনপির ভোট বর্জনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগে আওয়ামী লীগের নেতারাই নৌকার বিরুদ্ধে লড়েছেন এবার। তারাসহ স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন স্বতন্ত্রের মধ্যে ৬২ জন বিজয়ী হয়েছেন। এদের ৫৯ জন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
বাকিদের মধ্যে দুজন সরাসরি দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তাদের একজন মোহাম্মদ সিদ্দিকুল আলম জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে নীলফামারী-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বাজিমাত করেছেন। নৌকার ছাড় পেয়েও আসনটিতে জিততে পারেননি জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান।
স্বতন্ত্র হয়ে জেতা আরেকজন সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপির বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা তাকে সমর্থন দেন।
আর সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট) আসনে নৌকাকে হারিয়ে জয় পেয়েছেন ধর্মভিত্তিক সংগঠন আঞ্জুমানে আল ইসলাহ'র সভাপতি মোহাম্মদ হুছাম উদ্দিন চৌধুরী। সরকার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ফুলতলীর
এই পীরের কাছে ১৪ হাজার ভোটে হেরেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিন আহমদ।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ২৯৮ আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ২২২টিতে।
এর বাইরে জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।
স্বতন্ত্র জয়ীরা হলেন
দিনাজপুর-১ মো. জাকারিয়া, নীলফামারি-৩ মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, নীলফামারি-৪ মো. সিদ্দিকুল আলম, রংপুর-১ মো. আসাদুজ্জামান, রংপুর-৫ মো. জাকির হোসেন সরকার, কুড়িগ্রাম-২ মো. হামিদুল হক খন্দকার, গাইবান্ধা-১ আব্দুলস্নাহ নাহিদ নিগার, গাইবান্ধা-২ শাহ সারোয়ার কবীর, বগুড়া-৩ খান মুহাম্মদ সাইফুলস্নাহ আল মেহেদী, নওগাঁ-৪ এস এম ব্রহানী সুলতান মামুদ, নওগাঁ-৬ মো. ওমর ফারুক।
রাজশাহী-২ মো. শফিকুর রহমান, নাটোর-১ মো. আবুল কালাম, কুষ্টিয়া-১ মো. রেজাউল হক চৌধুরী, কুষ্টিয়া-২ মো. কামারুল আরেফিন, কুষ্টিয়া-৪ আব্দুর রউফ, ঝিনাইদহ-২ মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, যশোর-৫ মো. ইয়াকুব আলী, যশোর-৬ মো. আজিজুল ইসলাম, বরগুনা-১ গোলাম সরোয়ার টুকু, বরিশাল-৪ পংকজ নাথ, পিরোজপুর-২ মো. মহিউদ্দিন মহারাজ, পিরোজপুর-৩ মো. শামীম শাহনেওয়া, টাঙ্গাইল-৩ মো. আমানুর রহমান খান রানা, টাঙ্গাইল-৪ আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল-৫ মো. ছানোয়ার হোসেন।
জামালপুর-৪ মো. আব্দুর রশীদ, শেরপুর-১ মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু, ময়মনসিংহ-১ মাহমুদুল হক সায়েম, ময়মনসিংহ-৫ মো. নজরুল ইসলাম, ময়মনিসংহ-৬ মো. আব্দুল মালেক সরকার, ময়মনসিংহ-৮ মাহমুদুল হাসান সুমন, ময়মনসিংহ-১১ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ, নেত্রকোনা-৩ ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, কিশোরগঞ্জ-২ মো. সোহরাব উদ্দিন।
মানিকগঞ্জ-১ সালাউদ্দিন মাহমুদ, মানিকগঞ্জ-২ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ, মুন্সিগঞ্জ-৩ মোহাম্মদ ফয়সাল, ঢাকা-৪ মো. আওলাদ হোসেন, ঢাকা-৫ মো. মশিউর রহমান মোলস্না সজল, ঢাকা-১৮ মো. খসরু চৌধুরী, ঢাকা-১৯ মো. সাইফুল ইসলাম, গাজীপুর-৫ আক্তারুজ্জামান, নরসিংদী-৩ মো. সিরাজুল ইসলাম, ফরিদপুর-৩ আব্দুল কাদের আজাদ, ফরিদপুর-৪ মজিবুর রহমান চৌধুরী, মাদারীপুর-৩ মোসা. তাহমিনা বেগম।
সুনামগঞ্জ-২ জয়াসেন গুপ্তা, সিলেট-৫ মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী, হবিগঞ্জ-১ আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ-৪ সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ এস এ কে একরামুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ মো. মঈন উদ্দিন, কুমিলস্না-২ মো. আব্দুল মজিদ, কুমিলস্না-৩ জাহাঙ্গীর আলম, কুমিলস্না-৪ মো. আবুল কালাম আজাদ, কুমিলস্না-৫ এমএ জাহের, লক্ষ্ণীপুর-৪ মো. আব্দুলস্নাহ, চট্টগ্রাম-৮ মো. আব্দুচ ছালাম, চট্টগ্রাম-১৫ আব্দুল মোতালেব, চট্টগ্রাম-১৬ মুজিবুর রহমান।