সরবরাহ বাড়ায় নিম্নমুখী এলএনজির দাম
প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
এশিয়ায় ডিসেম্বরে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি রেকর্ড সর্বোচ্চ বেড়েছে। আমদানি বাড়া সত্ত্বেও স্পট মার্কেটে জ্বালানিটির দাম নিম্নমুখী। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি রপ্তানি সর্বকালের সর্বোচ্চে উঠেছে। শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক এই দেশ দুটি থেকে সরবরাহ বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দামে নিম্নমুখী প্রভাব পড়েছে। খবর রয়টার্স
বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলার জানিয়েছে, ডিসেম্বরে এলএনজি আমদানিতে শীর্ষে ছিল এশিয়া। মাসটিতে এশিয়া দেশগুলোর আমদানি পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার টন, যা আগের মাস নভেম্বরের ২ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার টনের চেয়ে বেশি। এর আগে সর্বোচ্চ আমদানির রেকর্ড ছিল ২০২২ সালের জানুয়ারির ২ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সে রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
এশিয়ায় মাসটিতে এলএনজি আমদানির শীর্ষে ছিল চীন। একক দেশ হিসেবে জাপান থেকে ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি এলএনজি ক্রয় করেছে দেশটি। ডিসেম্বরে চীনের আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ লাখ ২০ হাজার টনে, যা নভেম্বরের ৬৯ লাখ ৭০ হাজার টনের চেয়ে বেশি। কেপলারের মতে, এটা ২০২১ সালের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
এশিয়ার আরেক বৃহৎ আমদানিকারক হচ্ছে জাপান। দেশটি ডিসেম্বরে ৬৭ লাখ ৮০ হাজার টন এলএনজি আমদানি করেছে, যা নভেম্বরের ৫৪ লাখ টনের চেয়ে বেশি এবং গত বছরের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। দক্ষিণ কোরিয়া ডিসেম্বরে ৫১ লাখ টন এলএনজি আমদানি করেছে, যা নভেম্বরের ৪১ লাখ ৯০ হাজার টনের বেশি এবং ২০২১ সালের ফেব্রম্নয়ারির পর সর্বোচ্চ।
এদিকে এলএনজির চাহিদা বাড়লেও জ্বালানিটির দাম কমেছে। ২৯ ডিসেম্বর এলএনজির সাপ্তাহিক স্পট ইনডেক্স ১১ দশমিক ৯০ ডলার থেকে কিছুটা কমে ১১ দশমিক ৭০ ডলার এমএমবিটিইউতে নেমেছে। গত বছরের আগস্টের পর এটিই জ্বালানিটির সর্বনিম্ন মূল্য সূচক।
শিল্প তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে এলএনজির স্পট মূল্য ৫৮ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। এর পেছনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে দায়ী করা হচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এর পর থেকে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেয় ইউরোপ।
তবে বিকল্প উৎস থেকে আমদানি বাড়িয়েছে ইইউ। কেপলারের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ডিসেম্বরে ইউরোপে এলএনজি আমদানি বেড়ে ১ কোটি ১৮ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। আগের মাস নভেম্বরে ১ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার টন আমদানি করেছিল ইউরোপীয় দেশগুলো। ডিসেম্বরের এই আমদানি ২০২৩ সালের এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ।
এশিয়া ও ইউরোপজুড়ে ডিসেম্বরে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি শীত থাকে। এর প্রভাবে মাসটিতে এলএনজির চাহিদা বেড়ে যায়। কেপলারের প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বরে এশিয়ায় এলএনজির উচ্চ চাহিদা বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি সরবরাহকারীদের ব্যবসাকে গতিশীল করেছে। বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রপ্তানিকারক অস্ট্রেলিয়াকে ২০২৩ সালে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ডিসেম্বরে দেশটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টন এলএনজি রফতানি করেছে, যা নভেম্বরের ৭৫ লাখ ১০ হাজার টনের চেয়ে বেশি এবং মাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ।