ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের

বিএনপিকে চিরতরে লালকার্ড দেখানো হবে ৭ জানুয়ারি

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
আসছে ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে চিরতরে লালকার্ড দেখানো হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বিএনপি এখন অপেক্ষায় আছে, আটলান্টিকের ওপার থেকে স্যাংশন আসবে। শেখ হাসিনা ভিসানীতির তোয়াক্কা করেন না। শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপার থেকে স্যাংশনকে ভয় পান না। তিনি ভয় পান একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে। তিনি ভালোবাসেন বাংলাদেশের জনগণকে। বাংলাদেশের মাটি ও জনগণ আমাদের শক্তির উৎস। কোনো বিদেশি শক্তির হুমকি-ধমকি আমরা পরোয়া করি না।' বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, 'খেলা হবে লুটপাটের বিরদ্ধে, খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরারা সাবধান। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।' তিনি বলেন, 'বিএনপি এখন কোথায়? ফাউল করে লালকার্ড খেয়ে পালিয়েছে। বিএনপি ভুয়া, ওদের আন্দোলন ভুয়া, এক দফা ভুয়া, ৩২ দল ভুয়া, মানববন্ধন ও পদযাত্রা ভুয়া, বিএনপির হরতাল-অবরোধ পাবলিক মানে না, বিএনপি হচ্ছে ভুয়া।' প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতিকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আকর্ষণীয় করতে ছাত্রলীগের নেতাদের উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সংগঠনের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের বলেন, 'মেধা, সাহস, চলাফেরা ও পোশাক পরিচ্ছদে স্মার্ট হতে হবে। স্মার্ট মানে গতানুগতিক ভাষণ দেওয়া নয়। কথা বলতে হবে স্মার্টলি, বলতে হবে চোখের ভাষায়, বুঝতে হবে মনের ভাষায়। যে কথা বললে মন শুনতে চাইবে। সেই কথা বলতে হবে, যেই কথা নেতৃত্ব দেবে। সেটাই হলো বক্তৃতা।' তিনি বলেন, 'সাধারণ ছেলে-মেয়েদের বোঝাতে হবে, এই দেশ ভালো লোকদের হাতে থাকলে ভালো হবে। ভালো লোকেরা না এলে রাজনীতি মূল্যহীন হয়ে পড়বে। রাজনীতিতে মেধাবীদের আসতে হবে, তা না হলে দেশের রাজনীতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। চরিত্রবানদের রাজনীতিতে আসতে হবে, তা না হলে রাজনীতি চরিত্রহীন হয়ে পড়বে। ভালো লোক ক্ষমতায় এলে দেশ ভালো চলবে।' ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'রুটিন লাইফ লিড করতে হবে। সময়টাকে ভাগ করে কাজে লাগাতে হবে। গৎবাঁধা মুখস্থ বক্তৃতা দিয়ে নেতা হওয়া যাবে না। নেতা হতে হলে নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করতে হবে। রাত ৮-৯টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অফিসে ছাত্রলীগের আড্ডা দেওয়ার দরকার নাই। পড়াশোনা করে নেতৃত্বের কোয়ালিটি অর্জন করতে হবে।' সমাবেশ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি টিএসসি হয়ে শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন হয়ে, কাকরাইল থেকে নাঈটিঙ্গেল মোড় দিয়ে জিরো পয়েন্ট হয়ে গুলিস্তানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পর্যন্ত যায়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে ছাত্রলীগের এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে 'স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান'। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘিরে নিয়মিত কর্মসূচির পাশাপাশি এ বছর নৌকা নিয়ে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এর আগে সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ধানমন্ডিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনে সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুসহ সাবেক ও বর্তমান বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।