মনজুর আলমের ২০ দফা কর্মপরিকল্পনা

প্রকাশ | ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

বিশেষ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ মোহাম্মদ মনজুর আলম বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে জনাকীর্ণ সাংবাদিক ও নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনের উপস্থিতিতে ২০ দফা কর্মপরিকল্পনার একটি ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহার ঘোষণা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তার অতীত কর্মকান্ডসহ সমাজসেবার কিছু অংশ তুলে ধরেন। আগামী ৭ জানুয়ারি সারা দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তিনি চট্টগ্রাম-১০ সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে ফুলকপি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই নির্বাচন দেশের দলমত নির্বিশেষে তথা সব নাগরিকের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে, নির্ভয়ে, বিনা বাধায় ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের মনোনীত প্রার্থীদের মহামূল্যবান ভোট প্রদান করে তাকে নির্বাচিত করবে। তিনি বলেন, 'আমার নির্বাচনী ইশতেহার ও মতবিনিময় সভার মাধ্যমে আমি চট্টগ্রাম ১০ আসনের ভোটারদের জানাতে চাই, আগামী ৭ জানুয়ারি আপনারা উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসবেন এবং চট্টগ্রাম ১০ আসনের উন্নয়নে আমার ফুলকপি প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করে দেশ ও দশের সেবা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবেন। সাবেক মেয়র বলেন, 'বিগত ২০১০ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগরবাসী বিপুল ভোটে আমাকে মেয়র নির্বাচিত করে নগরভবনে পাঠিয়ে নগরবাসীর সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমিও মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমার সাধ্যমত আপ্রাণ চেষ্টা করেছি নগরবাসীকে সেবা দিতে। এবারও ঠিক সেভাবে আমার প্রতীক ফুলকপি মার্কায় আপনাদের মহামূল্যবান ভোট দিয়ে মহান সংসদে পাঠিয়ে আপনাদের দাবি-দাওয়া, নাগরিক অধিকার এবং এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলার সুযোগ দিবেন। ইশতেহারে সংক্ষিপ্ত আকারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমি কিছু অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছি। যদি আমাকে আপনারা আপনাদের মহামূল্যবান ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেন, ইনশালস্নাহ; আমি আমার ইশতেহারের সবগুলো অঙ্গীকার পূরণ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাব। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম বলেন, 'বিগত ৪০ বছর যাবত আমি মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। আমি ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে প্রায় ১৭ বছর টানা ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলর পদে থেকে এলাকার সেবা করছি। এ সময় ৯ বার (৩.৫ বছর) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ মেয়াদ পর্যন্ত আমি নির্বাচিত মেয়র হিসেবে নগরবাসীর সেবা করেছি। আপনারা জানেন, আমার মরহুম শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতার নামে আলহাজ মোস্তফা হাকিম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছি। এ ছাড়াও আমি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এবং আলহাজ হোছনে আরা মনজুর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছি। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের অধীনে ১০৩টি সেবাধর্মীমূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাতৃসদন হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মন্দির, মহাশশ্মানসহ আরও অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আমি সারাজীবন মাটি ও মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।' তিনি আরও বলেন, 'সাংবাদিক সমাজ ও জাতির নির্ভরতার প্রতীক। আপনাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আজ স্বাধীন দেশের সংবাদমাধ্যম। আমি আশা করি, আপনাদের আদর্শিক লেখনি ও সংবাদ উপস্থাপনের মাধ্যমে আমার বক্তব্য আপামর জনগণের মাঝে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে আমার প্রতীক ফুলকপি মার্কায় মূল্যবান ভোটদানে উৎসাহিত করবেন ইনশালস্নাহ।' সমাজসেবক মনজুর আলম উলেস্নখ করেন, 'আমরা হযরত মনছুর আলী শাহ (র.) এর বংশধর। চট্টগ্রাম পীর আউলিয়াদের পুণ্যভূমি। এই অঞ্চলে বসবাসরত সব মানুষ যাতে নিঃস্বার্থভাবে সেবা পায়, এই আমার অঙ্গীকার।' স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ মোহাম্মদ মনজুর আলম তার নির্বাচনী ইশতেহারের কর্মপরিকল্পনায় বলেন, 'স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা, বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরির সুব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।' ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হারিছ, জাফর আহমদ, আবুল কাশেম, শাহ আলম, সুলতান আহমদ, মো. নুর মিয়া, এম.এ. তাহের, শাহীন আলম, আলহাজ মোহাম্মদ সরওয়ার আলম, নিপুর চৌধুরী, শামসুল আলমসহ নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন গণসংযোগ : স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ মোহাম্মদ মনজুর আলম নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার পর ৪ ডিসেম্বর তার চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার ৮ ওয়ার্ডের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগ করেন। তার নির্বাচনী প্রধান কার্যালয় থেকে গণসংযোগ শুরু করে সাগরিকা মোড়, সিডিএ মার্কেট, পাহাড়তলী বারকোয়ারটার, ঈদগাঁ কাঁচা রাস্তা, মনছুরাবাদ, দেওয়ানহাট, টাইগারপাস, আমবাগান, পাহাড়তলী কলেজ রোড, ওয়ার্লেস মোড়, জাকির হোসেন মোড়, মহিলা কলেজ মোড়, জাকির হোসেন বাই লেইন, ২ নম্বর গেট, জিইসি, ওয়াসার মোড়, ইস্পাহানী মোড়, দেওয়ানহাট, বাদামতলী মোড়, এক্সেস রোড, বড়পোল, নয়বাজার বিশ্বরোড মোড় হয়ে তিনি নির্বাচনী প্রধান কার্যালয়ে গণসংযোগ সমাপ্ত করেন। গণসংযোগে তার নির্বাচনী এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনসহ বিপুলসংখ্যক সমর্থক ও কর্মী উপস্থিত ছিলেন।