প্রত্যেক রোহিঙ্গা পাবেন ১০ ডলারের রেশন
প্রকাশ | ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডবিস্নউএফপি) কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ডবিস্নউএফপি রোহিঙ্গাদের মাসিক খাদ্য রেশন জনপ্রতি ৮ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১০ মার্কিন ডলার করবে এবং পর্যায়ক্রমে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশে প্রস্তুত পুষ্টিকর চাল সরবরাহ শুরু করবে।
রোববার ডবিস্নউএফপির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, আর্থিক সঙ্গতির তীব্র অবনতির ফলে ২০২৩ সালে রোহিঙ্গাদের খাদ্য বরাদ্দ হ্রাস পেয়েছে। মার্চ মাসে কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসকারী পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য ফুড ভাউচারের মূল্য জনপ্রতি ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ১০ মার্কিন ডলার এবং জুনে ৮ মার্কিন ডলারে নামিয়ে আনা হয়। রেশন কমানোর আগেও পাঁচ বছরের কম বয়সি ৪০ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগতো এবং ১২ শতাংশ তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতো।
তারপর থেকে ডবিস্নউএফপির পরিবীক্ষণে দেখা গেছে, জনসংখ্যার মধ্যে খাদ্যগ্রহণ ব্যাপকহারে কমে গেছে এবং নেতিবাচক মোকাবিলার প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ পর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ করেনি, যা জুন মাসে ৭৯ শতাংশ ছিল। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো শিশুদের মধ্যে পুষ্টির অবস্থার দ্রম্নত অবনতি।
সর্বশেষ পুষ্টি জরিপের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, তীব্র অপুষ্টি ১৫.১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের আগমনের পর থেকে সর্বোচ্চ ছিল। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে ১৫ শতাংশের জরুরি সীমা অতিক্রম করেছে।
২০২৩ সালে শরণার্থীরা আবারও একাধিক অগ্নিঝুঁঁকি এবং বারবার ঘূর্ণিঝড়, বর্ষাকালীন বন্যা ও ভূমিধসের শিকার হয়েছে। ক্যাম্পগুলোতে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা এবং নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি মানবপাচারের কারণে তাদের ঝুঁঁকি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৬৮ জন রোহিঙ্গা নৌকায় করে ঝুঁঁকি নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দিয়েছে, এদের প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু।
রেশন বৃদ্ধির পাশাপাশি ডবিস্নউএফপি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলাদেশে প্রস্তুত পুষ্টিকর চাল বিতরণ শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে ১-২টি ক্যাম্পে শুরু হয়ে শেষ পর্যন্ত কক্সবাজার ও ভাসানচর দ্বীপের সব ক্যাম্পে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
ডবিস্নউএফপি প্রতিনিধি ডম স্কালপেলি বলেন, 'বছরের পর বছর ধরে রোহিঙ্গাদের উদারভাবে আশ্রয় দেওয়া, ঝুঁঁকিপূর্ণ বাংলাদেশিদের সহায়তা করার পাশাপাশি আমরা রোহিঙ্গাদের প্রতিও সম্পূর্ণ প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। আমরা আমাদের সব দাতাদের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।' তিনি বলেন, '২০২৪ সালে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ ও পুষ্টিকর রেশন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য তাদের আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।'
বাংলাদেশে প্রস্তুত পুষ্টিকর চাল যুক্ত করে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য রেশন জনপ্রতি ১২.৫০ মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে বর্তমানে ডবিস্নউএফপির ৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতি রয়েছে।