শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দুপচাঁচিয়ায় কুমড়োবড়ি খ্যাত গ্রাম সাবলা

অরবিন্দ কুমার দাস, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:২৯
সাবলা গ্রামে কুমড়োবড়ি তৈরিতে ব্যস্ত একটি পরিবার -যাযাদি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কুমড়োবড়ির গ্রাম হিসেবে খ্যাত সাবলা। এ গ্রামে কুমড়োবড়ি তৈরি ও বিক্রি করে অনেক পরিবারই আজ আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সাবলা, লাফাপাড়া, সদরের লক্ষ্ণীতলা, কালীতলা, বাঁকপাল হিন্দুপাড়া, কইল এলাকায় শীত মৌসুমে এ কুমড়োবড়ির ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এর মধ্যে সাবলা ও লাফাপাড়া (হিন্দুপাড়া) উলেস্নখযোগ্য। শুধু এ গ্রামেই প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের লোকজন এ কুমড়োবড়ি তৈরি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি আর্থিকভাবে সচ্ছলতার মুখ দেখছেন। বাংলা সনের কার্তিক মাস হতে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত কুমড়োবড়ি তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা বেশ চলে। পুরুষরা সাংসারিক কাজের পাশাপাশি ও নারীরা ঘরগৃহস্থালি কাজের ফাঁকে এ পেশায় মনোযোগী হওয়ায় এ পাঁচ মাসে তারা বেশ আর্থিকভাবে লাভবান হন। কুমড়োবড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাসকালাইয়ের ডাল, কুমোড়, কালাই জিরা ও মসলা। বাজার হতে কালাই কিনে তা রোদে শুকিয়ে যাঁতায় পিষে ঝাড়া হয়। তারপর পানি মিশিয়ে বেশ কিছু প্রক্রিয়া শেষে কুমড়োবড়ি খাবার বা বিক্রির উপযোগী হয়। বর্তমানে কুমড়োবড়ি মান ভেদে ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে হাটবাজারে কেনাবেচা হচ্ছে। এ গ্রামের কুমড়োবড়ির খ্যাতির কারণে সোনাতলা, গোবিন্দগঞ্জ, মহিমাগঞ্জ জেলা শহর বগুড়া ও গাইবান্ধা হতে ব্যবসায়ীরা এসে কুমড়োবড়ি পাইকারি কিনে নিয়ে যান। উপজেলার সাবলা হিন্দু পাড়ার কুমড়োবড়ি ব্যবসায়ী শ্যামল মহন্ত জানান, সংসারের অন্য কাজের পাশাপাশি বছরে পাঁচমাস কুমড়োবড়ি ব্যবসা করে আর্থিকভাবে কিছুটা লাভবান হয়েছেন তিনি। এ ব্যবসা করে ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করানো ও ২/৪টি গরু পালন করা সম্ভব হচ্ছে। এলাকার প্রবাসীরা এ মৌসুমে বাড়িতে এলে এখান হতে কুমড়োবড়ি কিনে নিয়ে যান। সাবলা গ্রামের গৃহিণী চৈতী রানী মহন্ত বলেন, সংসারের ঘরগৃহস্থালি কাজের ফাঁকে এ কুমড়োবড়ি তৈরি করে কিছুটা হলেও অর্থের মুখ দেখছেন তারা। তাদের গ্রামের কুমড়োবড়ির কদর জেলা শহর ছাড়াও অন্যান্য উপজেলায় রয়েছে। তবে ওই গ্রামের কুমড়োবড়ি ব্যবসায়ীদের দাবি মাসকালাইসহ অন্যান্য উপকরণের দাম কম হলে ও সরকারিভাবে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে তারা আরও লাভবান হতে পারতেন। উপজেলার কইল গ্রামের স্বপন কুমার শীল জানান, শীত মৌসুমে তরকারির সঙ্গে ভালোমানের কুমড়োবড়ি থাকলে খাবারের স্বাদের মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে