আজকের যায়যায়দিন

মহান মুক্তিযুদ্ধে কুমিলস্নার বিভিন্ন এলাকার চেনা-অচেনা অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। তাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্মিত হয়েছে ভাস্কর্য ও স্মৃতিফলক। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্মরণে কুমিলস্না সেনানিবাসের প্রধান ফটকের পাশে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিসৌধ 'যাদের রক্তে মুক্ত স্বদেশ'। ১৯৭২ সালের ১৬ মে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় এবং ১৯৭৪ সালের ১১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন করেন। স্মৃতিসৌধের নকশা ও মডেল করেছেন স্থপতি আবদুর রশিদ। কুমিলস্না ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছেন। সেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা স্মরণ করে কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে রানীর দীঘির পাড়ে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন ওল্ড ভিক্টোরিয়ান্স নির্মাণ করেছে 'স্বাধীনতা সৌধ'। ১৯৯৫ সালের ২৬ মার্চ এ স্বাধীনতা সৌধের ফলক উন্মোচন করেন শহীদ যতীন্দ্র কুমার ভদ্রের স্ত্রী। বিনা পারিশ্রমিকে এর ডিজাইন ও মডেল তৈরি করেন বুয়েটের অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ। কুমিলস্না জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জেলা প্রশাসক একেএম শামসুল হক খান স্মরণে এবং পুলিশ লাইনে দেশের একমাত্র শহীদ পুলিশ সুপার মুন্সি কবির উদ্দিন স্মরণে নির্মিত হয়েছে 'স্মৃতি তোরণ' ও 'স্মৃতি ভাস্কর্য'। কুমিলস্না জেলা প্রশাসকের বাসভবন প্রাঙ্গণে নির্মিত হয়েছে 'শহীদ জেলা প্রশাসক শামসুল হক মঞ্চ'। জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত হয়েছে কুমিলস্না অঞ্চলের ৪ শতাধিক শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম সংবলিত বড় আকারের 'স্মৃতিস্তম্ভ'। জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেতিয়ারায় শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে 'শহীদ স্মৃতি সৌধ'। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা সদর ও পৌর এলাকায় রয়েছে 'শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ'। কুমিলস্না জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মিত স্মৃতিফলক ও ভাস্কর্যগুলো সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশের কল্যাণে কাজ করতে উজ্জীবিত রাখছে এবং বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করে দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তাদের প্রেরণা জোগাচ্ছে।