শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ হানিফের মৃতু্যবার্ষিকী আজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ও স্নেহভাজন, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফের চতুর্দশ মৃতু্যবাষির্কী আজ।

মোহাম্মদ হানিফ ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর রাতে ৬২ বছর বয়সে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ছাত্রাবস্থায় ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।

এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনসমূহ, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ স্মৃতি সংসদসহ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-আজিমপুর কবরস্থানে সকাল ১০টায় মেয়র হানিফের কবর জিয়ারত। বেলা ১১টায় আজিমপুরস্থ মেয়র মোহাম্মদ হানিফ জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল। এ সময় মেয়র হানিফের একমাত্র ছেলে ও আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন এবং তার স্বজনরা উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে, সকাল ১০টায় আজিমপুর কবরস্থানে মেয়র হানিফের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এ উপলক্ষে ৩০ নভেম্বর বিকাল ৩টায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে নাগরিক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।

জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের ট্রাকমঞ্চে শেখ হাসিনার ওপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার সময় নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানবঢাল রচনা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রক্ষা করেন মোহাম্মদ হানিফ। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রাণে রক্ষা পেলেও স্পিস্নন্টারের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি। মস্তিষ্কসহ দেহের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য স্পিস্নন্টার ঢুকে পড়ে। ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রম্নয়ারি মুক্তাঙ্গনে এক সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। মাথায় বিদ্ধ স্পিস্নন্টার প্রতিক্রিয়া-পরবর্তী সময়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ও অকাল মৃতু্যর কারণ হিসেবে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

১৯৪৪ সালের ১ এপ্রিল ঢাকার সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৬৫ সালে পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিবের দায়িত্ব পান। এ সময় ছয় দফা মুক্তি সনদ প্রণয়ন ও প্রচারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। '৬৯-এর গণ-অভু্যত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। তিনি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেওয়া ঢাকা-১২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। '৭৬ সালে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার মৃতু্য হয়।

১৯৯৬ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে স্বৈরাচারবিরোধী গণ-আন্দোলনে মোহাম্মদ হানিফ তার বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বে 'জনতার মঞ্চ' তৈরি করেন। যা তৎকালীন বিএনপি সরকারের পতনসহ আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট তৈরি করে এবং যার ফলে '৯৬-এর ১২ জুন দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করে এবং মোহাম্মদ হানিফের প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুুশ বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোকবাণী :মোহাম্মদ হানিফের চতুর্দশ মৃতু্যবার্ষিকীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শোকবাণী দিয়েছেন। মোহাম্মদ হানিফের একমাত্র পুত্র আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন পিতার মৃতু্যবার্ষিকীতে দেশবাসীর দোয়া কামনা করেছেন। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে