বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে ব্যাপক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলায় অর্থনীতির চাকা সচল :প্রধানমন্ত্রী

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদু্যৎ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ, বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আনার ব্যবস্থা, সর্বোপরি অর্থনীতির চাকাটা যাতে সব সময় সচল থাকে সেসব দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েই বর্তমান সরকার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করছে
ম যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যশোরের ভৈরব সেতু, পাবনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম বকুল স্বাধীনতা চত্বর, মাগুরার মহম্মদপুরে শেখ হাসিনা সেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন -যাযাদি/ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা সারাদেশে যোগাযোগের ব্যাপক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি। ফলে আজ আমাদের অর্থনীতির চাকা অনেক সচল। আরও অনেক কাজ আমরা শুরু করেছি, সেগুলোও সম্পন্ন করব ধারাবাহিকভাবে।

মাগুরা, নারায়ণগঞ্জ এবং যশোরে তিনটি সেতু ও পাবনায় স্বাধীনতা চত্বরের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

রোববার প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করেন সেগুলো হচ্ছে- মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলাধীন মধুমতি নদীর ওপর এলাংখালী ঘাটে ৬০০ দশমিক ৭০ মিটার দীর্ঘ শেখ হাসিনা সেতু, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলাধীন মুড়াপাড়া ফেরিঘাট রাস্তায় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ১০ হাজার মিটার চেইনেজে ৫৭৬ দশমিক ২১৪ মিটার দীর্ঘ বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) সেতু এবং যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় সড়ক ও জনপথের যশোর-খুলনা সড়কের ভাঙ্গাগেট (বাদামতলা) হতে আমতলা জিসি ভায়া মরিচা ও নাউলী বাজার সড়কে ভৈরব নদীর ওপর ৭০২ দশমিক ৫৫ মিটার দীর্ঘ সেতু। এছাড়া উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার পাবনায় 'বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে গণভবন সঙ্গে সচিবালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মাগুরা, নারায়ণগঞ্জ ও যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বর সংযুক্ত ছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন যুক্ত ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ প্রান্তে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীর প্রতীকসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য, গণমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্যসীমা যেমন আমরা কমিয়ে এনেছি, মাথাপিছু আয় আমরা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষের জীবনমান যে উন্নত করা যায় সেটাও আমরা প্রমাণ করেছি। সে সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদু্যৎ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ, বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আনার ব্যবস্থা, সর্বোপরি অর্থনীতির চাকাটা যাতে সব সময় সচল থাকে সেসব দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েই বর্তমান সরকার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলেই আজকে আমরা দেশের মানুষের উন্নতিটা করতে পারছি। আমরা কিন্তু হঠাৎ করেই কিছু করিনি। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে তখনও কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা ছিল। কেননা জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান দিয়ে গেছেন সেখানে দেশের মানুষের উন্নয়নের কথা, মৌলিক চাহিদাগুলো বাস্তবায়নের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। কাজেই, যখনই সরকারে এসেছি পরিকল্পিত উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি এবং যার সুফল এখন দেশের মানুষ পাচ্ছে।

১৯৭৫ সালের হত্যাকান্ডের পর ছয় বছর প্রবাস জীবনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাবা-মা, ভাই সব হারিয়ে নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আকাঙ্ক্ষার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত এবং উন্নত সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ করব বলে। একটাই সিদ্ধান্ত ছিল এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতেই হবে। যা আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তরিকভাবে চেয়েছিলেন এবং দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য নিজের জীবন তিনি উৎসর্গ করেছিলেন।

এ সময় নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ায় দেশের জনগণের কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই তারা বারবার আমাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশসেবা এবং তাদের জন্য কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে '৭৫ এর পর বাংলাদেশ অন্ধকারে ছিল। তবু '৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর একটু আলোর ঝলকানি পেয়েছিল। তবে আমরা একটা চক্রান্তের কারণে আবার ক্ষমতায় আসতে না পারায় অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন আর অন্ধকারে দেশ ডুবে যায় এবং বাংলাদেশের মানুষের জীবন থেকে আরও ৮টি বছর চলে যায়।

পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের জীবনের নানা দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রফিকুল ইসলাম বকুল একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তিনি (শেখ হাসিনা) যখন '৮১ সালে প্রবাস জীবন থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেশে ফেরেন তখন বারবার বাধার সম্মুখীন হন। তখন যে কয়েকজন তার পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সাহসে ভর করে সে কঠিন অবস্থার মোকাবিলা করেছেন তার মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল অন্যতম।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকে বারবার আমি বাধাগ্রস্ত হতাম, বিএনপি প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাকে বাধা দেয়। কোপাকুপি, বোমা হামলা, গাড়ি আক্রমণ, মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়া, জনসভায় হামলা সবই চলত।

অতীত স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, আমি যখন খুলনা থেকে রাজশাহী রওনা হলাম পথে হাজারো মানুষের ঢল। ভিড় ঠেলে যেতে অনেক সময় লেগে গিয়েছিল। ঈশ্বরদী পৌঁছতেই রাত প্রায় ১১টা বেজে যায়। সেখানে পৌঁছে শুনলাম আমাদের নাটোরের জনসভার মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে। সেখানে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করে তাদের কুপিয়েছে, গুলি করেছে, আমাকে সেখানে যেতে দেবে না এবং সেখানেই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি পিছিয়ে যাব না। আমি যাবই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তখন তাকে বকুল মামা (মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল) বলে ডাকতাম। তাকে বললাম আমার সঙ্গে আপনার কর্মী দিতে হবে এবং ট্রাক ভাড়া করতে হবে; যেহেতু অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মঞ্চ পুড়িয়েছে, বিএনপি আমাদের ঢুকতে দেবে না, কিন্তু আমরা ঢুকবই। সেখানে ৪০-৫০ জন কর্মীর একটি বাহিনী নিয়ে ট্রাক ভাড়া করে বকুল মামা আমাদের সঙ্গে ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গাড়ি ছিল না, খুলনার লাইনের একটা বাস ভাড়া করে আমরা যাচ্ছিলাম, মানুষের চাপে সে বাসের কয়েকটি গস্নাসও ভেঙে যায়। নাটোরে ঢোকার মুখে রেল ক্রসিংয়ে প্রচন্ড বোমাবাজি শুরু করল বিএনপি। বকুল মামা তার লোকজন নামিয়ে আক্রমণকারীদের ধাওয়া দিল। যদিও সেখানে বিএনপি সেদিন একটি ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছিল। তবু, আমরা সেখানে আহতদের উদ্ধার করে একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ট্রিপ করে করে অসংখ্য আহত নেতাকর্মীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে রাস্তার ওপরই একটা জনসভা করে এলাম। সেই চরম দুঃসময়ে এই রফিকুল ইসলাম বকুল আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, এই পাবনা ছিল সর্বহারাদের একটা জায়গা। আর স্বাধীনতার পর পর সব স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানের দোসররা আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। যার জন্য একদিকে যেমন ছিল আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি অন্যদিকে জামায়াতের একটা বিরাট ঘাঁটি। একাত্তরের বিজয়ের পর পরই আল্ট্রা লেফটিস্ট পার্টি, রাজাকার, সর্বহারারা সব একসঙ্গে জুটে গেল সেখানে। যে কারণে সেখানে সব সময়ই একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ছিল এবং আমাদের বহু নেতাকর্মীকে সেখানে হত্যা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এক সময় সেখানে দলের গ্রম্নপিং থাকায় মুকুল মামাকে এক সময় দলত্যাগ করতে হলেও সে গ্রম্নপিং এখন নেই। একটা মানুষ চলে যেতে পারে কিন্তু একটা মানুষের যে অবদান আমি সেটাকে কখনো অস্বীকার করি না এবং আমি তা করব না। তার অবদানটা আমাদের মনে রাখতে হবে। কারণ, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা।

এদিকে, আমাদের স্টাফ রিপোর্টার যশোর ও অভয়নগর প্রতিনিধি জানান, রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যশোরের অভয়নগরবাসীর স্বপ্নের ভৈরব সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যশোর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায়, যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. অধ্যাপক নাসির উদ্দিন, যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক বাবুল, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার দাস শান্ত, অভয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

অভয়নগর উপজেলার ভৈরব নদের পশ্চিম পাশে মশারহাটি এবং পূর্ব পাশে দেয়াপাড়া গ্রামকে সংযোগ স্থাপন করেছে সেতুটি। ৭০২ দশমিক ৫৫ মিটার দীর্ঘ এবং ৮ দশমিক ১ মিটার প্রস্থ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সেতুর উভয় পাড়ের ৩ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের লক্ষ্যে ব্যয় বেড়েছে আরও ৭ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ভৈরব সেতুটি নির্মাণ করেছে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সর্ যাংকিং। গত ঈদের পর থেকে এলাকার মানুষ চলাচল করছে।

আমাদের পাবনা প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার পাবনায় স্বাধীনতা চত্বরের উদ্বোধন করেছেন। অনুষ্ঠানে পাবনা প্রান্ত থেকে স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এবং স্কয়ার গ্রম্নপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু সংযুক্ত ছিলেন।

পাবনার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক, বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক দুদক কমিশনার শাহাব উদ্দিন চুপ্পু, পৌর মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের সহধর্মিণী নাসিমা ইসলাম, পাবনা-১ অসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা-৩ অসনের সংসদ সদস্য মোকবুল হোসেন, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ, পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামসহ স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্যরা।

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে পাবনা টাউন হল প্রতিষ্ঠা হলেও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্য হলে মুজিব বাহিনীর অন্যতম সংগঠক 'বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল মুক্তমঞ্চ' নাম দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে নতুন আঙ্গিকে নির্মিত চত্বরেরও নামকরণ করা হয়েছে 'বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বর'।

আমাদের মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি জানান, মাগুরার মহম্মদপুরে মধুমতি নদীতে ৬৩ কোটি ৩১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলাবাসীর স্বপ্নের 'শেখ হাসিনা সেতুর' আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাগুরার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী সেতুটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদার, পুলিশ সুপার খান মুহম্মদ রেজওয়ানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬০০ দশমিক ৭০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ দশমিক ৮০ মিটার। সেতুটিতে ১৫০টি পাইল, ১৪টি পিয়ার, ২টি অ্যাবাটমেন্ট ও ১৫টি স্প্যান রয়েছে। যা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬৩ কোটি ৩১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। সেতুটি নির্মাণের ফলে মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ ও যশোর জেলার একাংশের এবং ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও বরিশালসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সময় এবং নগদ অর্থ দুটোই বাঁচিয়ে নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও পণ্য পরিবহণে ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে