শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাড়ির অপব্যবহার ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কবার্তা

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
ঋণের টাকায় গাড়ি কিনে চলা যাবে না সরকারি গাড়িতে ব্যবহার করলে রক্ষণাবেক্ষণের অর্ধেক টাকা

সুদমুক্ত ঋণের টাকায় গাড়ি কিনেও সরকারি বা প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের নির্ধারিত টাকা তুলে নিচ্ছেন উপসচিব বা তার তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তারা- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দুর্নীতি দমন কমিশন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দফায় দফায় চিঠি দিয়েও এ অনিয়ম ঠেকাতে পারছেন না। সম্প্রতি সর্বোচ্চ সতর্ক করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সিনিয়র সচিব ও সচিবদের কাছে আবারও চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এতে প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণের টাকায় কেনা গাড়ি ও গাড়িসেবা নগদায়ন অনিয়মের বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছে, সরকারি গাড়ি অপব্যবহার থেকে বিরত রাখতে নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এ নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটালে 'সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮' অনুযায়ী অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। একই সঙ্গে গাড়ির সুবিধা নিয়েও যারা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করবেন তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্ধারিত টাকার অর্ধেক কেটে নেওয়া হবে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে কমপক্ষে তিন বছর অতিক্রম করেছেন এমন কর্মকর্তা, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব/সিনিয়র সচিব গাড়ি কেনার জন্য সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা সুদবিহীন ঋণ দেওয়া হয়। আর গাড়ির জ্বালানি তেল, ড্রাইভারের বেতনসহ রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাবদ প্রতি মাসে আরও দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু কর্মকর্তাদের এই গাড়ি ব্যবহার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি গাড়ি অফিসের কাজে ব্যবহার না করেও অনেকেই রক্ষণাবেক্ষণের পুরো টাকা তুলে নিচ্ছেন। এসব অনিয়ম দূর করতে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর, ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ৮ মার্চ সতর্ক করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাছে চিঠি দেওয়া হয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন থেকেও চিঠি পাঠানো হয়েছিল।

চিঠিতে বলা হয়, এরপরও লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু কিছু কর্মকর্তার সুদমুক্ত ঋণের গাড়ি ব্যবহার না করে মন্ত্রণালয় বিভাগের অধীন অধিদপ্তর, সংস্থা ও উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি এমনকি টিওঅ্যান্ডভুক্ত মাইক্রোবাস ব্যবহার করে অফিস যাতায়াতসহ পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন। অন্যদিকে কিছু কিছু কর্মকর্তা সরকারি গাড়ি ব্যবহারের সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এ গাড়ি ব্যবহার না করে গাড়ি সেবা নগদায়নের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাবদ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করছেন। এতে সরকারের জ্বালানি ও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

চিঠিতে চারটি নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, সুদমুক্ত ঋণের অর্থে কেনা গাড়ির মালিককে মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থা/উন্নয়ন প্রকল্পের যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। প্রেষণ/মাঠ প্রশাসন/প্রকল্পে কর্মরত কোনো কর্মকর্তার সার্বক্ষণিক সরকারি যানবাহন ব্যবহারের সুবিধা থাকলে সুদমুক্ত ঋণের অর্থে কেনা গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাবদ নির্ধারিত অর্থের ৫০ শতাংশ পাবেন। কর্মস্থলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুদমুক্ত ঋণের অর্থে কেনা গাড়ি ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অধীন দপ্তর/সংস্থা/উন্নয়ন প্রকল্পের যানবাহন ব্যবহার করা 'অসদাচরণ' বলে গণ্য হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে