শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাল্টা চাষে ভাগ্যের চাকা ঘুরল রফিকের

মামুন তালুকদার, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)
  ২২ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

ময়মনসিংহের ত্রিশালে মাল্টা চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন রফিক। অর্থনৈতিকভাবে সফলতা পেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে পুষ্টি চাহিদা পূরণে অনন্য ভূমিকা পালন করছেন।

জানা গেছে, অনেক স্বপ্ন নিয়ে পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে দীর্ঘ ১৪টি বছর প্রবাসে কাটিয়েছিলেন রফিক। প্রথমে পাড়ি জমান সৌদি আরবের মরুপ্রান্তরে। ৫ বছর পর দেশে ফিরে আবার চলে যান মালয়েশিয়াতে। সেখানে ফলের বাগান পরিচর্যার কাজ করেন দীর্ঘ ৯ বছর। তবুও ভাগ্যের চাকা ঘুরেনি সেখানে। ২০১৪ সালে নিরাশ হয়ে দেশে ফিরে বাড়ির পাশের ২ একর অনাবাদি জমিতে গড়ে তোলেন 'রফিক ফলদ ও কৃষি খামার'। রোপণ করেন মাল্টা গাছ। তার বাগানে মাল্টা ছাড়াও আমড়া, লিচু, আমলকি, উড়-বরই, আম, লেবু ও পেঁপেসহ নানা প্রজাতির ফলের চারা রোপণ করা হয়। বছর দুয়েক পরেই গাছগুলোতে ফল ধরতে শুরু করে। এছাড়া বর্তমানে ৮ একর জমির ওই বাগানে জামরুল, সুবেদা, আনার, ডালিম, আরবের খেজুর হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৬

ও মসলা জাতীয় এলাচিসহ ২২ প্রজাতির ফলের স্থান পেয়েছে। গত ৬ বছরে তার ফলদ বাগানে ৮-১০ জন লোকের কর্মসংস্থান মিলেছে। দৃষ্টিনন্দন ও উৎপাদনশীল এমনই একটি ফলদ বাগান ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেয় তার জীবন। উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল কৈতরবাড়ী গ্রামের নেয়ামোতুলস্নাহর ছেলে রফিকুল ইসলাম।

এ বছর ১২ কাঠা জমির মাল্টা বিক্রি হয় ৩ লাখ টাকা। পাশাপাশি প্রতি মাসে বারোমাসি লেবু বিক্রি হয় ১ লাখ টাকা। উৎপাদিত মাল্টা বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এ বছর বিভিন্ন জাতের ফলফলাদি বিক্রি করে আয় করেছেন প্রায় ১৩ লাখ টাকা। শীতকালীন সবজির জন্যও প্রস্তুত করেছেন প্রায় তিন একর জমি। বিভিন্ন ফলের চারাও বিক্রি করেন তিনি। ইতোমধ্যে দেশের অর্থনীতিতে ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিশেষ অবদান রাখায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সম্মাননা পেয়েছেন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রবাসে অনেক পরিশ্রম করেও অর্থনৈতিক চাকা ঘুরাতে পারিনি। তবে দেশে ফিরে ফলদ ও কৃষি খামার করে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়ে উঠেছি। ফলদ বাগানের পাশাপাশি বিরল প্রজাতির ১৫টি গারল পালনের খামার শুরু করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোয়েব আহমেদ জানান, তিনিসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা রফিকের ফলদ ও কৃষি খামার পরিদর্শন করেছেন। ওই বাগানে কোনো কেমিক্যাল বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না। ফলগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। রফিকের ফলদ বাগান দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেশ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক ফলদ বাগান করেছেন। অর্থনীতি ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিশেষ অবদান রাখছেন রফিক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে