শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঝিনাইদহে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ ১০ ঘণ্টা পর রেল চলাচল স্বাভাবিক

তিনটি ট্যাংক ফেটে দেড় লাখ লিটার তেল মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। বাকি দু'টি ট্যাংক সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সোমবার দিবাগত রাত ১.৪২ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে
তারেক মাহমুদ, কালীগঞ্জ ও আলমগীর হোসেন খাঁন, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ)
  ২৮ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের সাফদারপুর রেল স্টেশনে পাথর ও তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি বিটিও বগি লাইনচু্যত হয়। এর মধ্যে তিনটি ট্যাংক ফেটে দেড় লাখ লিটার তেল মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে। বাকি দু'টি ট্যাংক সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সোমবার দিবাগত রাত ১.৪২ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর রাতেই পাথারবাহী ট্রেনটি দর্শনা রেল স্টেশনে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এতে খুলনার সাথে সারা দেশের ১০ ঘণ্টা ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। রেল কর্মীদের চেষ্টায় মঙ্গলবার বেলা ১১.৪৫ মিনিটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদারপুর রেলস্টেশনের পস্নাটফর্মের পূর্ব প্রান্তে এ ঘটনা ঘটে। রাতে ট্রেন দু'টির মুখোমুখি সংঘর্ষের বিকট শব্দে আশপাশের লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। কন্টেইনার ফেটে তেল পড়ে আশপাশের গর্তে স্রোত বয়ে যাচ্ছে। এসময় অনেকে বাড়ি থেকে হাঁড়ি-পাতিল এনে তেল ভরে নিয়ে যান।

এই ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে রেলওয়ের পাকশী সহকারী ট্রাফিক অফিসার আব্দুস সোবহানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা দুর্ঘটনার কারণ জানতে কাজ শুরু করেছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে ১২০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।

দুর্ঘটনার পর শনিবার খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস বারোবাজারে এবং রূপসা এক্সপ্রেস এবং ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস যশোর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। অপরদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা এবং বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি দর্শনা স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ফলে দূরপালস্নার যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেককে বিকল্প গাড়িতে করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা যায়।

ঝিনাইদহে কোটচাঁদপুর সাফদারপুর স্টেশনের মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, দর্শনা থেকে নওয়াপাড়াগামী পাথরবাহী ডিজেএন-২৬ ডাউন ট্রেন সাফদারপুর স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে ছিল। রাতে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ডিজেলবাহী কেপি-২১ আপ ট্রেনটি পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছিল। রাত ১টা ৪২ মিনিটের সময় কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর স্টেশনে এলে চালক সিগনাল না মেনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় বিকট শব্দে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি ট্যাংক লাইন থেকে ছিটকে পাশে পড়ে যায়। এর মধ্যে তিনটি তেলের ট্যাংক ফেটে তেল পড়ে যায়। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা চেষ্টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এদিকে কোটচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনটি ট্যাংকারের তেল প্রায় সম্পূর্ণ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটিতে ৫০ হাজার লিটার তেল থাকে। এটি অত্যন্ত দাহ্য। যে কোনো সময় চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই আমরা রেললাইন ও আশপাশে পানি ছিটাচ্ছি এবং সবাইকে সতর্ক থাকতে বলছি। যেন কেউ কোনো রকমের আগুন জাতীয় কিছু ব্যবহার না করে। কারও ভুল হলেই বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে বলেও জানান এই ফায়ার কর্তা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116908 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1