শাহজাদপুরে সড়কে ডেরা বেঁধে ভূমিহীনদের মানবেতর জীবন

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

এম এ জাফর লিটন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ)
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গত কয়েক বছরে যমুনা নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সব হারিয়ে অসহায় পরিবারগুলোর ঠিকানা এখন সড়ক ও বাঁধ। প্রচন্ড ঝড়, বৃষ্টি ও শীতের তীব্রতায় পরিবার-পরিজন নিয়ে সড়ক ও বাঁধের ওপর ডেরা বেঁধে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, সোনাতনী, গালা ও জালালপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার যমুনা নদীর ভাঙনে গৃহহারা হয়েছেন। অথচ একসময় সব ছিল তাদের, গোলা ভরা ধান, মাঠজোড়া ফসল এবং সাজানো-গোছানো ঘরবাড়ি। কিন্তু যমুনার আগ্রাসী ভাঙনে ভিটা-বাড়ি, ফসলি জমি সব চলে গেছে নদীতে। তাই সর্বস্ব হারানো পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে শাহজাদপুর-কৈজুরী সড়ক, পাঁচিল-এনায়েতপুর সড়ক ও যমুনা নদী তীরবর্তী ভাটপাড়া, জগতলা, গালা ও ভেড়াকোলা বাঁধে। স্বাবলম্বী পরিবারের অনেকেই ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বাসস্থান গুটিয়ে নিরাপদ স্থানে জায়গা-জমি কিনে বসবাস করলেও হতদরিদ্র মানুষের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তাই তারা টিনের চাল আর ঝুঁপড়ি ঘর তুলে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। কাজ-কাম না থাকায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে অসহায় পরিবারগুলোর। স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। নানা অসুখ লেগেই আছে এসব পরিবারে। বছরের পর বছর ধরে এভাবে কাটলেও তাদের পুনর্বাসনে কোনো উদ্যোগ নেই। যমুনা তীরবর্তী কৈজুরী ইউনিয়নের পাথালিয়াপাড়া পাকা সড়কের তীরে বসবাসকারী পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাদের দুর্দশার কথা। এখানে বসবাসকারী মর্তূজা আলী (৬৫) জানান, এক সময় তাদের জাঁকজমকপূর্ণ গ্রাম ছিল, ঘর ছিল, বাড়ি ছিল। পুরো গ্রামটি যমুনা নদীতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ছেলেমেয়ে বড় হচ্ছে, বিয়ে-শাদি দেওয়া হচ্ছে, সংসার বড় হচ্ছে; তারপরও সংকীর্ণ জায়গায় বসবাস করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আর চলা সম্ভব নয়। দুর্দশা গোছাতে সরকারি খাস জায়গা বরাদ্দ করে তাদের পুনর্বাসন চান নদী সিকস্তি পরিবারগুলো। এ ব্যাপারে নদী তীরবর্তী ১০নং কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যেই নদী সিকস্তি পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।