গণতন্ত্র শুধু বইয়ের পাতায় থাকলে হবে না : ড. কামাল

মন্টু, আবু সাইয়িদসহ ৮ নেতা বহিষ্কার

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আগামী ১২ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করার পাশাপাশি শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দলের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিকসহ ৮ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ড. কামালের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। শনিবার এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশে গণতন্ত্রকে কার্যকর করতে হবে। গণতন্ত্র শুধু বইয়ের পাতায় থাকলে চলবে না, মানুষকে অধিকার ভোগ করে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা হয়। গত ১২ মার্চ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর এটিই কমিটির প্রথম সভা। সভায় আহ্বায়ক কমিটির ৭০ সদস্যসহ ১৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের সভাপতিত্বে সভায় সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া ছাড়াও দলের নেতা আওম শফিক উলস্নাহ, মহসিন রশিদ, সুরাইয়া বেগম, জানে আলম ও মোশতাক আহমেদ মূল মঞ্চে ছিলেন। সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিনিধি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বক্তব্য রাখেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, দলের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। দলে তরুণ ও নারীদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। দলের পক্ষ থেকে সারাদেশে সভা-সমাবেশ করুন এবং গণফোরামের নীতি-আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরুন। দেশের মানুষ সচেতন হলে সংবিধানের যে লক্ষ্যগুলো আছে- গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার সেগুলো তারা বুঝলে কার্যকরভাবে নিজের অধিকার রক্ষা করতে পারবে। আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোশতাক আহমদ দলের সিদ্ধান্ত পড়ে শোনাতে গিয়ে বলেন, সভা বর্তমান রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বাস্তবতায় সংগঠনকে শক্তিশালী, গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আগামী ১২ ডিসেম্বর শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণে এবং এ ব্যাপারে পাঠানো শোকজের জবাব না দেওয়ায় মোস্তফা মহসিন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিককে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত সভা গ্রহণ করছে। একইভাবে পূর্বে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত মো. হেলালউদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান ও আব্দুল হাসিব চৌধুরীকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সভায় উপস্থিত সদস্যরা হাততালি দিয়ে সমর্থন জানালেও মহানগর গণফোরামের হারুন তালুকদার দাঁড়িয়ে বলেন, আমি এসব সিদ্ধান্ত সমর্থন করি না। পরে সভার সভাপতি সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, একজন সমর্থন করেনি। বাকিরা হাততালি দিয়ে এসব সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। এসব সিদ্ধান্ত পাস হলো। তিনি বলেন, গণফোরামকে নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন, একটা খেলায় মেতে উঠেছে। গণফোরাম কোনো এজেন্সির পারপাস সার্ভ করার জন্য গঠিত হয়নি। বিদ্রোহীদের ইঙ্গিত করে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, তাদের আদর্শ, ব্যক্তিত্ব, দেশের জন্য তাদের চিন্তা যদি আপনাদের কাউকে বেশি আকৃষ্ট করে তাহলে তাদের দিকে যাওয়া উচিত। আর যদি ড. কামাল হোসেনের চিন্তাধারা আপনাকে বেশি আকৃষ্ট করে তাহলে এদিকে থাকবেন। গত বছরের ২৬ এপ্রিল গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে। সেই কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেন সভাপতি ও ড. রেজা কিবরিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এদিকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে গণফোরামের বিদ্রোহী অংশ বর্ধিত সভায় কাউন্সিলরদের সিদ্ধান্তে আগামী ২৬ ডিসেম্বর গণফোরামের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন।