চলমান বৃষ্টি ও উজানের দেশ থেকে আসা পানিতে দেশে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি হচ্ছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উজানে মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাতটি নদীর পানি সাতটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সাতটি নদীর মধ্যে কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি তিন সেন্টিমিন্টার, সিংড়া পয়েন্টে গুড় নদীর পানি ৭০ সেন্টিমিটার এবং আত্রাই পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানি কমছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি বাড়ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার দুপুরে বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র জানায়, বদরগঞ্জ পয়েন্টে যমুনেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, চকরহিমপুর পয়েন্টে করতোয়া নদীর পারি চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ঠাকুরগাঁও পয়েন্টে টাঙ্গন নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনটি নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার নিচে নেমেছে লরেরগড় পয়েন্টে যদুকাটা নদীর পানি। এদিকে বাংলাদেশ ও উজানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে উলেস্নখযোগ্য বৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ে ৩১৫ মিলিমিটার, লালাখালে ১৪১, কাউনিয়ায় ৭৮, রংপুরে ২৬৫, দিনাজপুরে ১২৪, মহাদেবপুরে ৬০, ডালিয়ায় ২৫৫, ঠাকুরগাঁওয়ে ১২০, সিলেটে ৫০, কুড়িগ্রামে ১৫৬, জাফলংয়ে ৮৮ এবং চিলমারীতে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একই সময়ে উজানে বৃষ্টি হয়েছে চেরাপুঞ্জিতে ১৬৩, জলপাইগুড়িতে ৮০ এবং কৈলাশহরে ৫৯ মিলিমিটার। বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূইয়া যায়যায়দিনকে বলেন, দেশের ১০১টি পয়েন্টের মধ্যে পানি বাড়ছে ৬৪ পয়েন্টে, কমেছে ৩২ পয়েন্টে। অপরিবর্তিত আছে ৫টি পয়েন্টে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সাতটি পয়েন্টে। তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। এতে ধরলা, যমুনেশ্বরী, করতোয়া, যমুনা, টাঙ্গন ও আত্রাই পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।