শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তরমুজের নতুন জাত উদ্ভাবন পটুয়াখালীর কৃষি বিজ্ঞানীদের

আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
হলুদ রঙের তরমুজ

গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে একফালি তরমুজ শীতল পরশ এনে দেয় প্রাণে। বাঙালির পছন্দের এই রসালো ফলটি সবার কাছেই জনপ্রিয়। দেশের দক্ষিণ উপকূলে কৃষকদের কাছে লাভজনক এই ফলটি চাষাবাদে বড় একটি অর্থ ব্যয় হয় বীজ সংগ্রহ করতে। প্রতি বছর তরমুজের বীজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর এ বাবদ বছরে প্রায় ৪শ' কোটি টাকা ব্যয় হয়। এসব বীজ হাইব্রিড হওয়ায় উৎপাদিত ফল থেকে বীজ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এছাড়া প্রতি বছর আলাদা আলাদা জাতের বীজ আমদানি করায় কৃষকদের বিভিন্ন সময় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তবে সব দেশে তরমুজের নিজস্ব জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা। কেন্দ্রে ইতোমধ্যে লাল এবং হলুদ রঙের দুটি জাতের সফলতাও মিলেছে। আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্র, লেবুখালীর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, প্রতি বছর চীন, ভারত, জাপান এবং মালয়েশিয়া থেকে তরমুজের হাইব্রিড বীজ সংগ্রহ করতে হয়। বিভিন্ন কোম্পানি এসব হাইব্রিড বীজ নানান নামে সংগ্রহ করে। ফলে উৎপাদিত তরমুজের জাতের ধারাবাহিকতা থাকে না। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর তথ্য মতে এতে ব্যয় হয় প্রায় ৪শ' কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র লেবুখালী কেন্দ্র চিন্তা করে কীভাবে একটি তরমুজের নিজস্ব জাত উদ্ভাবন করা যায়। এজন্য গত ৫ বছর এই কেন্দ্রে গবেষণা করা হয়। গবেষণার ফলে উদ্ভাবিত তরমুজের দুটি জাত উদ্ভাবন করা হয়। জাত দুটি ওপেন পলিনেটেড ভ্যারাইটি হওয়ায় কৃষকরা এ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন। যার ফলে কৃষককে প্রতি বছর বীজ ক্রয় করতে হবে না। পাশাপাশি শুধু গ্রীষ্মকালে নয় এই জাত দুটি সারা বছর আবাদ করা যাবে। আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, লেবুখালী'র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ইদ্রিস আলী হাওলাদার জানান, উদ্ভাবিত তরমুজের বীজ কৃষকরা সরাসরি সংরক্ষণ করতে পারবে এবং বছরে তিনবার এই তরমুজ আবাদ করতে পারবেন। ফলে কৃষক আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হবেন। অপরদিকে তরমুজটি যেমন খেতে মিষ্টি তেমনি এর সাইজও অনেকটা ফ্যামিলি সাইজের। ফলে ক্রেতারাও এটি কিনতে অকৃষ্ট হবেন। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র উদ্ভাবিত এই তরমুজের এই জাত দুটি জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদনের পর তা কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের দক্ষিণ উপকূলের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে