শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে ঢাকা উত্তরে আলোর মুখ দেখছে এলইডি বাতি!

ফয়সাল খান
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
দেশের একটি সড়কে জ্বলছে এলইডি বাতি -ফাইল ছবি

অবশেষে আলোর মুখ দেখছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) এলইডি বাতি। নানা জটিলতা কাটিয়ে উঠে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ডিএনসিসির সড়কে এলইডি লাইট লাগানো শরু করার আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সংস্থাটির মেয়র আতিকুল ইসলাম আগামী পহেলা জানুয়ারি থেকে এলইডি বাতি জ্বালিয়ে নগরবাসীকে ২০২১ সালের নববর্ষের উপহার দেবেন। ২০২১ সালের মধ্যে ডিএনসিসি এলাকায় ৪২ হাজার ৫০০ লাইট স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ডিএনসিসির প্রথম মেয়র আনিসুল হক দায়িত্ব নেওয়ার পর সড়কে এলইডি বাতি লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। নানা জটিলতায় তার জীবদ্দশায় সে প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। এরপর কয়েক দফায় মেয়র পরিবর্তন হয়। তবে উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্ধকার ও মৃদু আলোর কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্যানেল মেয়র ওসমান গণি ও জামাল মোস্তফার সময় প্রকল্পের কাজ হলেও দৃশ্যমান তেমন অগ্রগতি হয়নি। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রম্নয়ারি উপ-নির্বাচন মেয়র নির্বাচিত হন আতিকুল ইসলাম। ওই সময়ও প্রকল্পের কিছু কাজের অগ্রগতি হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে এবার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর প্রকল্পটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন বর্তমান মেয়র।

জানতে চাইলে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ১ জানুয়ারি ডিএনসিসির কিছু অংশে এ লাইট জ্বলবে। নগরবাসীর জন্য এটি হবে ২০২১ সালে নববর্ষের উপহার। ২০২১ সালের মধ্যে ডিএনসিসি এলাকায় ৪২ হাজার ৫০০ লাইট স্থাপন করতে পারব। মেয়র বলেন, নিরাপদ ঢাকা শহর করার জন্য যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলাম, সেই প্রত্যয়ের মধ্যে একটি হলো ঢাকা শহরকে আলোকিত রাখা। যে লাইটগুলো স্থাপন করছি তার প্রত্যেকটা ইউরোপে তৈরি। এগুলোর প্রত্যেকটির ১০ বছরের ওয়ারেন্টি পিরিয়ড রয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পুরো ডিএনসিসি এলাকায় এলইডি লাইট প্রকল্পকে ১৪টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি প্যাকেজের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১০টির চুক্তিও খুব শিগগিরই হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এলইডি সড়ক বাতি সরবরাহ ও স্থাপন (১ম সংশোধিত) শীর্ষক সমগ্র প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সময় কয়েক মাস বেশি লাগতে পারে। সড়ক বাতিগুলো পোল্যান্ড থেকে ক্রয় করা হচ্ছে।

গত ৮ সেপ্টেম্বর ডিএনসিসির নগর ভবনে এলইডি লাইট স্থাপনে ডিএনসিসি ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এলইডি সড়ক বাতি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম এবং বিএমটিএফের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) লে. কর্নেল তোফায়েল আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

সার্বিক বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম যায়যায়দিনকে বলেছেন, এলইডি বাতিসহ এর ৯৫ শতাংশ যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এতে একটু সময় লাগে। আর সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের আনুষঙ্গিক কাজেও সময় লেগেছে। চারটি প্যাকেজের বিশাল কর্মযজ্ঞ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। মেয়রের ঘোষণা দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন। করোনাভাইরাসের কারণে কাজ শেষ করতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক মাস বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।

এর আগে 'এলইডি সড়ক বাতি সরবরাহ ও স্থাপন' (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পটি গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদিত হয়। সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩৬৯ কোটি ১৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা। মূল প্রকল্পে ৪২ হাজার ৪৫০টি সড়ক বাতি স্থাপনের কথা রয়েছে। পরে সংশোধিত প্রকল্পে ৪৬ হাজার ৪১০টি এলইডি বাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে ১৫০ ওয়াটের তিন হাজার ৪০৮টি, ১২০ ওয়াটের তিন হাজার ৬৪৬টি, ৯০ ওয়াটের তিন হাজার ২৯টি, ৬০ ওয়াটের ১০ হাজার ৬৬৬টি, ৪০ ওয়াটের ২৫ হাজার ৬৬১টি এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে। এলইডি সড়ক বাতি স্থাপন বাবদ ৩১৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাতি ক্রয়, পোল ক্রয় ও স্থাপন, ফিটিংস, কন্ট্রোলিং সিস্টেম, সফটওয়ার, ওভারহেড ক্যাবলস ইত্যাদি সংযুক্ত রয়েছে। আর ৪৯ কোটি ৪০ লাখ ৩২ হাজার টাকা ব্যয় হবে হাইড্রোলিক গাড়ি ও অন্যান্য গাড়ি, যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং অন্যান্য খরচ বাবদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<113063 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1