আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ভিপি নুরের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় রুজুকৃত এ মামলায় বাদিনী তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ এনেছেন। এর আগে রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই একই ছাত্রী লালবাগ থানায় নুরুল হকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। এ মামলায়ও নুরের সঙ্গে যে ছয়জন আসামি করা হয়েছিল, নতুন মামলার এজাহারেও তাদের প্রত্যেকের নাম উলেস্নখ করে পৃথক অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নামে করা মামলাকে মিথ্যা মামলা অভিহিত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, তার থানায় দায়েরকৃত মামলাটিতে দুটি ধারা উলেস্নখ করা হয়েছে। একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে, আরেকটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। মামলার প্রধান আসামি বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। তার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রী বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ এবং পরে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ার অভিযোগ আনেন। মামলায় নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মীমাংসা করার নামে ওই ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন। বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাদের ভক্তদের দিয়ে ওই ছাত্রীর নামে 'উল্টাপাল্টা' প্রচার করাবেন। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, সহসভাপতি মো. নাজমুল হুদা ও শিক্ষার্থী মো. আবদুলস্নাহ হিল বাকী। একই তরুণীর করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় উপরোলিস্নখিত আসামিরা রয়েছেন। এতে তিন নম্বর আসামি হলেন নুরুল হক নুর। মামলায় ঘটনার স্থান উলেস্নখ করা হয়েছে কোতোয়ালি থানা এলাকার সদরঘাট হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট। মামলায় ঘটনার তারিখ ও সময় উলেস্নখ করা হয়েছে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রম্নয়ারি সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিট থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর দায়ের করা ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে নামলে ভিপি নুরসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। অবশ্য ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানায়, বিক্ষোভ মিছিলের সময় বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ কারণেই তাদের আটক করা হয়। অন্যদিকে মঙ্গলবার শাহবাগে আয়োজিত আরেক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা ছাত্র ও ছাত্রনেতাদের ওপর হামলার পরিণতি কখনো ভালো হয় না বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসান বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মশিউর রহমান, ঢাবি শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোলস্না, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মো. আতাউলস্নাহসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী। এদিকে সোমবার রাজধানীর মৎস্য ভবন এলাকা থেকে আটকের পর মুচলেকায় ছাড়া পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুর বলেন, আমরা বুঝিনি কী কারণে আমাদের ধরে আনা হলো আর কী কারণে ছাড়া হলো। সোমবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল থেকে নুরকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়। আটকের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নুরকে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানানো হলেও পুলিশ প্রহরায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা শেষে তাকে আবারো নিয়ে যান ডিবি পুলিশের সদস্যরা। পরে রাত পৌনে ১টার দিকে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে নুরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে, রাতে ডিবি অফিস থেকে বেরিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুর বলেন, আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়েছে। মারধরের কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়েছেন। পরে মুচলেকা নিয়ে আমাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি না কেন গ্রেপ্তার করা হলো আর কেন ছাড়া হলো। আইন অনুযায়ী নুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা :স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তরুণীর দায়ের করা মামলায় আইন অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। নুরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'নুরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। আমাদের সব নলেজে রয়েছে। যেভাবে এড্রেস করা দরকার সেভাবেই পুলিশ তদন্ত করছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।'