নারী-পুরুষের আয় বৈষম্য নিরসনই বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি চাকরি তথা আনুষ্ঠানিক খাতে নারী-পুরুষের বেতন বৈষম্য অনেকটা কম হলেও অনানুষ্ঠানিক খাতে বৈষম্য এখনো অনেক বেশি। সর্বস্তরে আয় বৈষম্য নিরসন করা এখনো বাংলাদেশে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা আইএলও'র গেস্নাবাল ওয়েজ রিপোর্টে দেখা যায়, বিশ্বে গড়ে নারী-পুরুষের আয় বৈষম্য ২২ শতাংশের মতো। কিন্তু বাংলাদেশে এটি মাত্র ২.২ শতাংশ যা সর্বনিম্ন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রমশক্তির ৮৭ শতাংশেরই কর্মসংস্থান হয় অনানুষ্ঠানিক খাতে। শ্রম জরিপের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীদের ৯২ শতাংশের কর্মসংস্থান এখনো অনানুষ্ঠানিক খাতে। বাংলাদেশে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ ৩৬ শতাংশের মতো। গত কয়েক দশকে কৃষি শিল্প এবং সেবা খাতের শ্রমবাজারে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির একটা ঊর্ধ্বগতিও দেখা গেছে। বাংলাদেশে পৌনে দুই কোটি নারী নানারকম পেশায় নিয়োজিত। তবে বেশিরভাগ নারীর কর্মসংস্থান এখনও অনানুষ্ঠানিক খাতে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-বিআইডিএস-এর গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আনুষ্ঠানিক খাতে প্রতিটা পদের বিপরীতে বেতন নির্ধারিত থাকে বলেই সে ক্ষেত্রে বৈষম্যের সুযোগ কম। অনানুষ্ঠানিক খাতে বৈষম্য বেশি কারণ কত বেতন হবে, কাকে কত টাকা মজুরি দেওয়া হবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। তিনি বলেন, কোনো কোনো আয় বৈষম্য হচ্ছে কর্মদাতার সৃষ্টি আর কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বা নারীর জীবনযাত্রাটা এমন যে, তার আয় বৈষম্যটা হয়েই যায়। বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক খাতে আয় বৈষম্যটা প্রবলভাবে বিদ্যমান। আনুষ্ঠানিক খাতে যত উচ্চ পদে নারী কাজ করেন, সেখানে আয় বৈষম্য ততই কম। তিনি আরও বলেন, নারী শ্রমিক যারা রাস্তার কাজ করছেন, ইট ভাঙছেন কিংবা রাস্তাঘাট নির্মাণের সাথে আছেন সেসব জায়গায় নারী শ্রমিক ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত মজুরি কম পেয়ে থাকে। বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, শুধুমাত্র নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিলে পরিবর্তন আসবে না। এছাড়াও নানারকম ফাঁক খুঁজে সেটা জোড়াতালি দিলে উদ্দেশ্য সফল হবে না। আয় বৈষম্য নিরসন করতে হলে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনটা জরুরি। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলছেন, আগের তুলনায় নারীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। নারীদেরকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। নীতিগতভাবে নারী-পুরুষের মধ্যে সাম্যতা চাই। তিনি বলেন, সংস্কৃতিগত কারণেও নারীরা তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে আছেন। সরকারি খাতে তো কোনো মজুরির ভিন্নতা নেই। এটা অবৈধ। প্রাইভেট সেক্টরের সবকিছু যে আমাদের নলেজে হয় তা নয়। সেখানেও কিন্তু আমাদের বলা আছে নীতিগতভাবে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। কিন্তু বাস্তবে যে সেটা হয় আমরা অস্বীকার করব না।