মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে আসছে অর্ধশত নতুন মুখ

ফয়সাল খান
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অর্ধশত নতুন মুখ আসছে। গত সোমবার রাতে জমা দেওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের খসড়া কমিটিতে নতুন ৩৪ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আগে উত্তরের প্রস্তাবিত কমিটিতে ১২ থেকে ১৫ জন নেতাকে নতুন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দক্ষিণের কমিটিতে ১২ কাউন্সিলরের নাম থাকলেও উত্তরে কোনো কাউন্সিলর বা জনপ্রতিনিধি রাখা হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জমা দেওয়া প্রস্তাবিত কমিটিতে অন্তত ১২ কাউন্সিলরকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে আগের কমিটির সহ-সভাপতি ও সম্পাদকমন্ডলীর অনেকেই আছেন। যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটি থেকে ৬, ছাত্রলীগের সাবেক ১৬, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১ এবং থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ থেকে ১১ জনকে নগর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ৭৫ সদস্যের মহানগর কমিটিতে অতিরিক্ত পাঁচটি নাম দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গত সম্মেলনে ৭১ সদস্য থেকে বাড়িয়ে ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করার অনুমতি দেওয়া হয়। আগের ৭১ সদস্যের কমিটিতে দুটি পদ ফাঁকা ছিল। ৫ সদস্য মারা যাওয়ায় এবং ৪টি পদ বাড়ায় মোট ১১টি পদ খালি হয়। গত কমিটির ২৩ জনকে বাদ দিয়ে মোট ৩৪টি পদ খালি হয়। এ পদগুলোতে নতুন ৩৪ জনকে পদায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুস সাত্তার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহিকে যথাক্রমে সহ-সভাপতি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। যুবলীগ থেকে আরও চারজনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তাছাড়া সহ-সভাপতি পদে সংসদ সদস্য রুহুল আমিন, খন্দকার এনায়েতউলস্নাহ, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, আওলাদ হোসেন ও ডা. দিলীপের নাম রয়েছে। অপর দুজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেন- অ্যাডভোকেট মোর্শেদ কামাল ও মিরাজ হোসেন। সাবেক ছাত্রলীগ থেকে দপ্তর সম্পাদক, সহ-দপ্তর সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, সহ-প্রচার সম্পাদকসহ ১২ জনকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এফ এম শরিফুল ইসলামকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদকীয় পদে রাখা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবিরকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। গত কমিটির ২ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদারকে ১ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক আকতার হোসেনকে ২ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রাখা হয়েছে। সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অন্তত ১২ কাউন্সিলরকে। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ডিএসসিসি ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল বাশার, ২ নম্বর ওয়ার্ডের আনিসুর রহমান, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মামুনুর রশিদ শুভ্র, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদুজ্জামান আসাদ, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মারুফ আহমেদ মনসুর, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওমর বিন আব্দাল আজিজ তামিম, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলাম ভাট্টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের রোকসানা আক্তার চামেলী ও লাভলী চৌধুরী রয়েছেন। জানতে চাইলে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফি যায়যায়দিনকে বলেন, প্রস্তাবিত কমিটিতে বিতর্কমুক্ত ও স্বচ্ছ ব্যক্তিদের রাখার চেষ্টা করেছি। কাজ করার জন্য কিছু গতিশীল লোক প্রয়োজন। তাই নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি করার চেষ্টা করেছি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। এদিকে করোনার আগেই ব্যবসায়ীসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ থেকে বেশ কয়েকজনকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া জমা দিয়েছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। সূত্রমতে, ৭১ সদস্যবিশিষ্ট আগের কমিটির তিনজন মারা গেছেন। এই তিনটি পদসহ আরও অন্তত ১০ জন বাদ পড়তে পারেন। এসব পদে নতুন মুখ আসতে পারে। বিশেষ করে সহ-সভাপতিসহ বেশ কয়েকটি পদে আসতে পারেন ব্যবসায়ীরা। সহযোগী সংগঠন ছাড়াও বেশ কয়েকটি থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অনেকেই নগর কমিটিতে আসতে পারেন। সূত্র মতে, প্রস্তাবিত কমিটিতে সদ্য সাবেক কমিটির কাউকেই বাদ দেওয়া হয়নি। পুরানো ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সঙ্গে নতুন আরও ১২ থেকে ১৫টি নাম যোগ করে তালিকা দেওয়া হয়। তবে পুরানো কমিটির প্রত্যেক নেতার নামের পাশে তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত ভূমিকা লিখে দেওয়া হয়। তালিকায় সাবেক নেতাদের কমিটির দায়িত্বে থাকাকালীন 'নিষ্ক্রিয়' ছিল, নাকি সক্রিয় ছিল তা উলেস্নখ্য করে দেওয়া হয়। কাকে পদোন্নতি দিতে হবে আবার কাকে কমিটিতে রাখা যাবে না সে বিষয়েও পরামর্শ দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান যায়যায়দিনকে বলেন, করোনার আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটির একটি খসড়া তালিকা জমা দিয়েছি। কমিটিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের মধ্যে যারা দক্ষ, পরিশ্রমী এবং ১/১১ সময়ে যারা রাজপথের রাজনীতিতে অবদান রেখেছেন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের কর্মসূচিতে যারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন তাদের রাখা হয়নি। বিতর্কিতদের না রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। এবারের কমিটিতে জনপ্রতিনিধি বা কোনো কাউন্সিলরকে রাখা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ নভেম্বর ঘোষণা করা হয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম। উত্তরে সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি দায়িত্ব পান। দক্ষিণে আবু আহমেদ মন্নাফীকে সভাপতি ও হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে