শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ :মির্জা ফখরুল

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -যাযাদি

নানা আয়োজনে ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার দিনটি উপলক্ষে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, দলীয় পতাকা উত্তোলন, দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। এই দিবসের প্রধান কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই তাদের বড় চ্যালেঞ্জ। ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, 'গৃহবন্দি' খালেদা জিয়াকে মুক্ত এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনের বিকল্প নেই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, হতাশ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপিকেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। পুরো জাতি তাদের দিকে তাকিয়ে আছে, স্বপ্ন দেখছে। যথাযথ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই সেটাকে সফল করতে হবে। বৃহত্তর ঐক্য গঠন করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই আন্দোলন করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিতে ও গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জিয়াউর রহমান বিএনপির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি দেশের মানুষের মধ্যে বৃহৎ ঐক্য সৃষ্টি করেছিলেন। বিভিন্ন মত ও পথের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছিলেন। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সেই দল ৪২ বছর অতিক্রান্ত করছে। এখনো শুধু গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হয়েছে। কারণ বিএনপিকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। এর একমাত্র কারণটাই হচ্ছে, আওয়ামী লীগের হাতে গোলামির জিঞ্জির আর বিএনপির হাতে স্বাধীনতার পতাকা। তিনি বলেন, অস্ত্র দিয়ে, জোর করে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। বিএনপিকে নতুন পৃষ্ঠা ১১ কলাম ৪ প্রজন্মের কাছে যেতে হবে। শুধু আবেগ দিয়ে নয়, বাস্তবতার সঙ্গে তাদের সামনে সত্যকে তুলে ধরতে হবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে এই প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ১৯৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত দেশের ঘটিত ঘটনাসমূহকে দেশের নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যাচার করে, ইতিহাসকে বিকৃত করে এ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে। ওই সময়ের ক্ষমতাসীন দলের সীমাহীন হত্যা, গুম, খুন, দুর্বৃত্তায়ন, দুর্ভিক্ষ, বাকশাল প্রতিষ্ঠা এমনকি মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে। সেই সময়ের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি দেশকে স্বনির্ভর দেশে পরিণত করেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, যেখানে করোনায় দেশ বিধ্বস্ত সেখানে আওয়ামী লীগ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সরকার ঘোষিত করোনা আক্রান্ত ও মৃতু্যর পরিসংখ্যন সঠিক নয়। সরকার সত্যকে আড়াল করে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আজ না হয় কাল এ সরকারের পতন ঘটবে। বিএনপিকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া এ সরকারের পতন হবে না। আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমানসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এর আগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করেন সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ নেতাকর্মীরা। এ সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, তারা বিশ্বাস করেন- সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং মিথ্যা হয়রানির মামলা থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেবে। খালেদা জিয়াকে একটা মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে তাকে সাজা দিয়েছে, যে সাজা তার প্রাপ্য না এবং জমিনটা তার প্রাপ্য ছিল। বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যে সাদামাটাভাবে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করে বিএনপি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকালে দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন নেতৃবৃন্দ। স্থায়ী কমিটির নেতাদের পর জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা মহানগর উত্তরের দুই গ্রম্নপ (পৃথকভাবে) ও দক্ষিণ বিএনপি, কেন্দ্রীয় অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে