শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৭শ বন্দি ধারণক্ষমতার জেলা কারাগার হবে কেন্দ্রীয় কারাগার

যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

দেশের যেসব জেলা কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা কমপক্ষে ৭০০ জন তা কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তর করা হবে। তবে একই সঙ্গে এসব কারাগারের জমির পরিমাণ ৩০ একর হতে হবে, তবে জমি প্রাপ্তি সাপেক্ষে এর পরিমাণ কম-বেশি করা যাবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কারাগার হতে হলে দশ বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের অন্তরীণ রাখার সুবিধা থাকতে হবে। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত বন্দিদের অন্তরীণ রাখার সেলসহ দন্ডাদেশ কার্যকর করার জন্য ফাঁসির মঞ্চ থাকতে হবে। এছাড়া কমপক্ষে ৫০ বেডের কারা হাসপাতালের সুব্যবস্থা, কারা কর্মচারীদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকলে জেলা কারাগার কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। উলিস্নখিত সাতটি শর্ত পূরণ হলে জেলা কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তর করবে সরকার। এমন নিয়ম রেখে 'জেলা কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগার ঘোষণাকরণ বিধি, ২০২০' এর খসড়া করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এখন এটি চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিচ্ছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ। গত ৫ আগস্ট খসড়াটি সব বিভাগীয় কমিশনার, কারা মহাপরিদর্শক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, কারা উপমহাপরিদর্শক, কেন্দ্রীয়/জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার/জেল সুপারের কাছে পাঠিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে মতামত পাঠাতে বলেছে। সরকার প্রয়োজন মনে করলে নতুন বৈশিষ্ট্য আরোপ এবং উপরের শর্ত শিথিল করতে পারবে বলেও বিধিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। বিধিতে কারাগারের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে- যে কোনো স্থাপনা, স্থান, ইমারত যা বন্দিদের আটক রাখা, চিকিৎসা, সংশোধন ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত হবে এবং বন্দিকে স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত যানবাহনকে কারাগার বুঝাবে। কেন্দ্রীয় কারাগার ঘোষণার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন- পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন ও নির্বাহী প্রকৌশলী (গণপূর্ত)। সংশ্লিষ্ট জেলা কারাগারের জেল সুপার কমিটিতে সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। খসড়ায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় কারাগার ঘোষণা-সংক্রান্ত জেলা কমিটির প্রতিবেদন এবং কেন্দ্রীয় কারাগার ঘোষণার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে যাবতীয় কাগজপত্রসহ কারা মহাপরিদর্শক সরকার বরাবর প্রস্তাব পাঠাবে। কেন্দ্রীয় কারাগার ঘোষণার লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করতে হবে বলে খসড়া বিধিতে উলেস্নখ করা হয়েছে। এই কমিটির সভাপতি থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব বা অতিরিক্ত সচিব (কারা অনুবিভাগ)। বাংলাদেশ কারা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৭৮৮ সালে তৎকালীন শাসকদের একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার তথা কারা বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ১৮১৮ সালে রাজবন্দিদের আটক রাখার জন্য বেঙ্গল বিধি জারি করা হয়। ১৮৩৬ সালে জেলা ও তৎকালীন মহকুমা সদর ঢাকা, রাজশাহী, যশোর ও কুমিলস্নায় কারাগার নির্মাণ করা হয়। পরে ১৯২৯ সালে ঢাকা ও রাজশাহী কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগার হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলাদেশ জেলের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে