মহাসড়কে আলু ছিটিয়ে হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির অভিনব প্রতিবাদ

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। বুধবার রাজশাহী ও রংপুরে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- রাজশাহী অফিস জানিয়েছে, রাজশাহীর হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকেরা। বুধবার দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া এলাকায় সরকার কোল্ড স্টোরেজের সামনে তারা এ বিক্ষোভ করেন। কৃষকেরা রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে ৮ বস্তা আলু ফেলে দিয়ে গড়াগড়ি দেয় এবং বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় বিএনপি এ কর্মসূচিতে একাত্মতা জানায়। ক্ষুব্ধ কৃষকেরা জানান, প্রতি কেজি আলু সংক্ষণের জন্য আগে রাজশাহীর হিমাগারগুলোকে ৪ টাকা ভাড়া দিতে হতো। এবার তা বৃদ্ধি করে ৮ টাকা করা হয়েছে। ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তারা দ্রম্নত আগের ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান। হিমাগারে ভাড়া না কমালে এবার তারা প্রয়োজনে আলু ফেলে দেবেন, কিন্তু হিমাগারে রাখবেন না। বিক্ষোভ মিছিল শেষে কৃষকেরা ওই এলাকায় পথসভাও করেন। সেখানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাভোকেট শফিকুল হক মিলন। তিনি বলেন, 'হিমাগার মালিকেরা সিন্ডিকেট করে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধি করেছেন। এ ভাড়া কার্যকর হলে বাজারে আলুর দাম বাড়বে। এটি হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, 'কৃষকের ওপর বোলডোজার চালিয়ে কাউকে ভাড়া বৃদ্ধি করতে দেওয়া হবে না। হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে।' কৃষক আহসান আলী বলেন, এর আগে কৃষকদের আন্দোলনের মুখে কোল্ড স্টোরেরের মালিকরা ভাড়া কিছুটা কমানোর আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করছে না। দফায় দফায় আবেদন জানিয়েও ভাড়া কমানোর দাবি পূরণ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আবারও অন্দোলনে নেমেছেন চাষিরা। আলু সংরক্ষণের ভাড়া কমানো না হলে এ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেন তারা। এদিকে, আগের বছরগুলোতে আলু সংরক্ষণ করা হতো বস্তা হিসেবে। ৫০ কেজির প্রতি বস্তার জন্য ভাড়া নেওয়া হতো ৩৪০ টাকা। হিমাগার মালিকেরা ৫০ কেজির বস্তাতেই আলু দেওয়ার কথা বললেও ফড়িয়ারা ৮০ কেজির বস্তাতেও আলু রাখতেন। এতে হিমাগার মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। তাই তারা এবার নিয়ম করেছেন, কেজি হিসেবে সংরক্ষণ ভাড়া নেওয়া হবে। হিমাগার মালিকেরা বলছেন, ৫০ কেজির বস্তার জন্য আগে ৩৪০ টাকা নেওয়া হলে ভাড়া পড়তো ৬ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু ফড়িয়ারা বস্তায় এত বেশি আলু দিতেন যে, ভাড়া পড়ত ৪ টাকা। অথচ বস্তায় ৫০ কেজির বেশি আলু না ঢোকানোর জন্য সরকারের নির্দেশনাও আছে। তা প্রতিপালন না করায় বাধ্য হয়েই তারা কেজি হিসেবে ৮ টাকা করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, 'ভাড়া কেন্দ্রীয়ভাবেই নির্ধারণ হয়। এবারও সেটাই হয়েছে। ৫০ কেজির বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আমরা এবার কেজি হিসেবে গিয়েছি। কারণ, বেশি ওজনের বস্তা টানা হিমাগারের শ্রমিকদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা কেজি হিসেবে গেলেও এটা বলছি না যে, ৮ টাকাই দিতে হবে। হিমাগার মালিকেরা যে যার সক্ষমতা অনুযায়ী এ ব্যাপারে ছাড় দেবে।