কাহারোলে একজন ইউএনও'র কাঁধে ১৯০ পদের ভার!

প্রকাশ | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

কাহারোল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের কাঁধে প্রায় ১৯০টি পদের ভার। তবুও যেন হার না মানা এই ইউএনও নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি সরকারের দেওয়া বাড়তি দায়িত্বও পালন করছেন। উপজেলার ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০টি মাদ্রারাসা ও ৭টি কলেজের সভাপতি দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে ইউএনও-কে। দেখতে হয় তাদের ফাইল পত্র, কোনো প্রতিষ্ঠানের মামলা থাকলে সেখানে বাড়তি সময় ব্যায় করতে হয়। এছাড়া উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে তাকে ১২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি না থাকায় এভাবে অন্তত ১৯০টি পদের দায়িত্ব তিনি নিজ কর্তব্য মনে করে হাস্যউজ্জ্বল ভাবে সামলিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান, দুইজন ভাইসচেয়ারম্যান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় সভাপতি না থাকায় সব পদের দায়িত্ব সামলাতে অক্লান্ত পরিশ্‌্রম করছেন এই ইউএনও। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দপ্তরের স্থায়ী কমিটির ৯টিতে মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান আর ৮টিতে পুরুষ ভাইসচেয়ারম্যান সভাপতি দায়িত্ব পালন করতেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কয়েকটি কমিটিতে উপদেষ্টা এবং ৮হতে ১০টি কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকতেন। তবে তারা না থাকায় উপজেলা প্রশাসক হিসেবে সব কমিটির দায়িত্ব এখন ইউএনও এর কাঁধে। জানা গেছে, আইন শৃঙ্খলা কমিটি থেকে শুরু করে শিক্ষা, কৃষি উন্নয়ন, প্রতিবন্ধী ভাতা, হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা, বয়স্ক-বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ভাতা, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, মাতৃত্বভাতা, চোরাচালান প্রতিরোধ, এনজিও সমন্বয়, টেন্ডার, টিআর-কাবিটা, বিভিন্ন দিবস উদযাপনসহ উপজেলা পর্যায়ের সরকারি দপ্তরগুলোর বিভিন্ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ইউএনও। উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, তাদের কাছে প্রতিদিন শতশত মানুষ বিভিন্ন ধরনের সেবা নিতে আসতেন। এখন উপজেলা চেয়ারম্যান না থাকায় সব কাজের চাপ পড়েছে ইউএনও'র উপর। একা এত দায়িত্ব সামলানো সত্যিই খুব কঠিন। তারপরেও তিনি যে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন সেটা প্রশংসার দাবিদার। ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, 'এতগুলো দায়িত্ব একা পালন করা কষ্টকর হলেও তা করতে হবে। অতিরিক্ত সময় দিয়ে হলেও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।' কাজের চাপ থাকলেও কেউ হয়রানির শিকার হচ্ছে না দাবি করে তিনি বলেন, 'অফিসের কর্মীদের নিয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করছি আমরা। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন উপজেলা পরিষদে এসে যেন ভোগান্তিতে না পড়েন, সেজন্য স্টাফসহ আমরা সবাই সেদিকেও নজর রাখছি।'