৫২'র ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পেরিয়ে গেলেও বরিশালের বাবুগঞ্জে ১৮৯ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩৫টিতে নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। একুশে ফেব্রম্নয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একমাত্র ভরসা কলাগাছের অস্থায়ী মিনার। জানা গেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার মোট ১৮৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। বাকি ১৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও নির্মাণ হয়নি স্থায়ী শহীদ মিনার।
জানা যায়, উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রথমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে মোট ১৮৯টি। যার মধ্যে ৫৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলেও ১৩৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। তবে তথ্য মতে সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৩৪টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ১০৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভরসা কলাগাছের অস্থায়ী মিনার।
এছাড়া বাবুগঞ্জে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে মোট ৫৫টি। যার মধ্যে মাত্র ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার ১৯টি মাদ্রাসার একটিতেও নেই শহীদ মিনার।
অনেক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকলেও তা জরাজীর্ণ। ফলে শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলন ও বায়ান্নর শহীদদের বিষয়ে জানতে ও শিখতে পারছে না কিছুই। এছাড়া যেগুলো রয়েছে সেগুলোও সংস্কারের অভাবে অবহেলায় পড়ে আছে।
শহীদ মিনার না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ৫২'র ভাষা আন্দোলন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও একুশে ফেব্রম্নয়ারির গুরুত্ব সম্পর্কেও সঠিক ধারণা নিতে পারছে না বলে মনে করেছেন সচেতন সমাজ।
ভূতেরদিয়া নর্বআর্দশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম খান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে ধর্না দেওয়ার পরও মেলেনি ভবন ও শহীদ মিনার।
ভূতেরদিয়া বোয়ালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালাযয়ের প্রধান শিক্ষক হেলেনা পারভীন বলেন, 'প্রাথমিক শিক্ষা অফিস হতে তালিকা করা হয়। কিন্তু পরে আর কোন অগ্রগতি দেখা যায় না। ব্যাক্তি উদ্যোগে কেউ করে দেয় না। আমরা সব সময় কলা গাছ দিয়েই শহীদ দিবস পালন করি। এবছরও তাই করব।'
রহমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন বলেন, 'আমরা বিদ্যালয়ের নিজস্ব শহীদ মিনার না থাকলেও পার্শ্ববর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছি আমরা।'
এ বিষয়ে ইউএনও ফারুক আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত। বাবুগঞ্জে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। বিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা কমিটির সভাপতিদের ডেকে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে শহীদ মিনার নির্মানের তাগিদ দেওয়া হবে। ধীরে ধীরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করা হবে।