বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে বালু লুটের মহোৎসব!

শত শত একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন!
অনিরুদ্ধ রেজা, কুড়িগ্রাম
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে বালু লুটের মহোৎসব!
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু লুটের মহোৎসব -যাযাদি

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। ফলে শত শত একর ফসলি জমি ধ্বংসে পতিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বস্নকের সাইড হুমকির মুখে।

অভিযোগ সূত্রে, সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলাধীন ১১ নং হাতিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া ভবেশ মৌজার সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদ হতে শত শত ট্রাক্টর দিয়ে অবৈধভাবে আবাদি জমি কেটে বালু উত্তোলন ও বিক্রি চলছে। এতে করে ওই এলাকার শত শত একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নদী ভাঙন প্রতিরোধ কাজ প্যাকেজ নং ঢ়০৩/১৭ শেষ হয়েছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ায় জমিগুলো আবাদের উপযোগী ভূমি চরে পরিণত হয়েছে। এখানকার সাধারণ কৃষকগণ উক্ত জমিগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফসল যেমন ধান ভুট্টা বাদাম ইতিমধ্যে চাষাবাদ শুরু করেছেন। এমতবস্থায় ওই মৌজার মৃত নুরুল হোসেনের পুত্র নজরুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে শত শত ট্রাক্টর দিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ সাইডের বস্নকের উপর দিয়ে ট্রাক্টর চালিয়ে যথেচ্ছ ভাবে বালু উত্তোলন করে অবাধে বিক্রি করছে। এতে করে যেমন ফসলী জমি ধ্বংস হচ্ছে তেমনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী প্রতিরোধ কাজের পিসিং ও ডাম্পিং হুমকির মুখে পড়ছে। এলাকাবাসীরা বাঁধা প্রদান করলে উক্ত বালুর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বাবু এলাকাবাসীদের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠেন। নিরুপায় হয়ে ঐ এলাকার শত শত সাধারণ কৃষকরা গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ পত্র গত ১৯শে জানুয়ারী'২৫ ইং তারিখে উলিপুর উপজেলা ভূমি কমিশনার, উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উলিপুর সদর থানা ও জেলা প্রশাসক, কুড়িগ্রাম বরাবরে এর প্রতিকার চেয়ে পেশ করেন।

অভিযোগের পরেও গত একমাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না হওয়ায় বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।

এ পরিস্থিতিতে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পুনরায় গত ১১ ফেব্রম্নয়ারী' ২৫ তারিখে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ দাখিল করার পরেও বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলনের মহোৎসব। হতাশাগ্রস্ত কৃষক ও এলাকাবাসী বলেন, 'অবৈধভাবে বালুর উত্তোলনের ফলে ফসলি জমির পাশাপাশি আমাদের বাড়িঘর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বস্নকের কাজের অবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে।'

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহীর প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, 'অভিযোগ পেয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপ-সহকারী প্রকোশলীকে নির্দেশ দিয়েছি।'

উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে হাতিয়ায় গত ১৬ ফেব্রম্নয়ারী মোবাইল কোর্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় দুইজনকে হাতেনাতে আটক করে দুই মাসের জেল ও দুটি ট্রাক্টর জব্দ করা হয়। নিয়মিত এ অভিযান চলমান থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে