বাকৃবিতে ছয় শতাধিক কৃষি ভিত্তিক গবেষণা উপস্থাপন

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

বাকৃবি প্রতিনিধি
ছয় শতাধিক কৃষিভিত্তিক গবেষণা পোস্টার ও মৌখিক আকারে উপস্থাপন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকরা। বাকৃবির ছয়টি অনুষদের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ওই উপস্থাপনায় অংশ নেন। গত সোমবার বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি স্থানে পোস্টার ও মৌখিক উপস্থাপনাগুলো নেওয়া হয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালায় ২৩টি টেকনিক্যাল সেশনে উপস্থাপনাগুলো সম্পন্ন হয়েছে। বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাম্মাদুর রহমান বলেন, ১৯৮৪ সালে বাউরেস প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৪৫৩৭টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছে এবং ৬৭৪টি গবেষণা প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অনুষ্ঠানে ২৩টি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপিত হবে এবং তা থেকে পরবর্তী গবেষণার পরিকল্পনা করা হবে। পরবর্তীতে সেশন ভিত্তিক বেস্ট ২১ জন উপস্থাপনকারীকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়াও পোস্টার সেশন মোট ৬ জনকে সেরা পোস্টার উপস্থাপনকারী হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গবেষকরা কৃষিখাতে নানান নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছেন। কেউ কাজ করেছেন ডায়াবেটিস কমানোর বিভিন্ন পদ্ধতি ইঁদুরের উপর প্রয়োগ করে; কেউ কাজ করছেন গবাদি পশু, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের মান উন্নয়নে; বাজারে থেকে কিনে আনা মুরগী, ডিমের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে; গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও এর সমাধান; জৈব সারের মান উন্নয়ন ও উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে; ফসল উৎপাদনের বিভিন্ন সমস্যা ও নতুন নতুন উদ্ভাবন; মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জলজ সম্পদের অধিকতর ব্যবহার; কৃষি প্রযুক্তিতে উন্নয়ন; গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় কৃষি অর্থনীতির নানা দিক ইত্যাদি। এসময় ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মো. আশিকুজ্জামান বলেন, 'প্রাথমিক গবেষণায় বাজার থেকে আমরা যে পোল্ট্রি মুরগি কিনে আনি, তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি কক্সিডিওস্ট্যাটও থাকে। এর প্রভাবে মানুষের লিভার, কিডনি, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া কক্সিডিওস্ট্যাটও অতিরিক্ত শরীরে প্রবেশ করলে উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নেপালি শিক্ষার্থী দীপেশ আরিয়াল ও আসমিতা ভূজেলের সহযোগিতায় প্রাথমিক গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে।' এছাড়া স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারাহ তাসফিয়া বলেন, 'বাউরেসে আমার গবেষণা উপস্থাপনের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এটি আমাকে বৈশ্বিক গবেষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ করে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও কার্যকর গবেষণার পথ সুগম করবে।' উলেস্নখ্য, বাকৃবি গবেষণা কার্যক্রম সুক্ষ্ণভাবে পরিচালনার জন্য ১৯৮৪ সনের ৩০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ১৬১তম অধিবেশনে 'বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) অধ্যাদেশ' অনুমোদন পায়। তখন থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত প্রকল্প-গবেষণা কার্যক্রমের তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পর্যবেক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব বাউরেস পালন করে আসছে।