বাজারে পণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

রসিকে এখনও শুরু হয়নি টিসিবির পণ্য বিক্রি

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

আবেদুল হাফিজ, রংপুর
রংপুর সিটি করপোরেশনে (রসিক) এলাকায় ১১ লাখ মানুষের আবাসস্থলে বাজার নিয়ন্ত্রণে ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) ভোগ্যপণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি এখনো শুরু হয়নি। অথচ দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনে এসব পণ্য বিক্রি জানুয়ারী থেকে শুরু হয়েছে। তবে জেলার ৮ উপজেলার মধ্যে ৭টিতে জানুয়ারীতে শুরু হলেও বদরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষ তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এতে করে পণ্য বিক্রি শুরু না হওয়া এলাকাগুলোতে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির মুখে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। টিসিবি সূত্র জানায়, সর্বশেষ গতবছর ডিসেম্বরে রসিকের মেনু্যয়াল কার্ডধারী প্রায় একলাখ সাধারণ মানুষ রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডের ৬৬টি পয়েন্টে টিসিবির পণ্য পেয়েছিলেন। চলতি বছর জানুয়ারী থেকে তা আর পাচ্ছেন না। ডিলাররাও জানিয়েছেন, স্মার্ট কার্ড জটিলতায় চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে রংপুর সিটিতে টিসিবির পণ্য সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছায়নি। সূত্র মতে, এই সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে মেনু্যয়াল কাডধারী ছিলো ৯৯ হাজার ২৬৮টি। স্মার্ট কার্ড পাওয়ার ভিত্তিতে মেনু্যয়াল কার্ডগুলো সিটিতে জমা দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৪৩টি স্মার্ট কার্ড মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে। বাকি কার্ড এখনও আসেনি। কার্ডগুলো ইতোমধ্যে ওয়ার্ডগুলোতে বিতরণ চলছে। তবে নতুন বছরের জানুয়ারীতে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু করতে পারেনি। তবে ওই কার্ডগুলো জানুয়ারীতে সিটিতে পাঠানো হয়েছিল। জানা গেছে, একেটি পরিবারের একাধিক মেনু্যয়াল কার্ড থাকার কারণে তা বাতিল করা হয়েছে। যারা নতুন করে স্মার্ট কার্ড নিতে আগ্রহীরা নতুন করে এনআইডি কার্ড, নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে হবে। এর পরে তিনি স্মার্ট কার্ড পাবেন। বিতরণ শুরু হয়েছে। তবে ৮টি ওয়ার্ডে এখনও তা বিতরণ শুরু হয়নি। সিটি অফিস সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না পাওয়ায় এই সিটিতে টিসিবি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. উম্মে কুলসুম সিটিতে মেনু্যয়াল কার্ডধারীরা টিসিবির পণ্য পেয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি এও জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না পাওয়ায় স্মার্টকার্ডগুলো বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে, টিসিবি'র ৫টি পণ্য বিতরণে সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২০ ফেব্রম্নয়ারী নির্ধারণ করা হয়েছে। পণ্যগুলো হলো, সোয়াবিন তেল ১০০ টাকা প্রতি লিটারে ২ লিটার,ছোলা ৬০ টাকা প্রতি কেজি দরে ২ কেজি, চিনি প্রতি কেজি ৭০ টা কেজি দরে এককেজি, মসুর ডাল প্রতি কেজি ৬০ টাকা কেজি দরে ২ কেজি ও খেজুর প্রতি কেজি ১৫৫ টাকা কেজি দরে এককেজি করে নগরবাসি পাবে। এখন পণ্য ক্রয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। যার যা প্রয়োজন মতো কিনতে পারবেন। এমনকি স্মার্ট কার্ড ছাড়াও পণ্য ক্রয় করা যাবে। এটা শুধুমাত্র সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য প্রযোজ্য হবে। সিটির ১১টি স্থানে টিসিবির পণ্য ট্রাক সেল করা হবে। এছাড়া ২১৪ জন ডিলার পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে ট্রাক সেল হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে,নগরীর কাচারী বাজার, বাংলাদেশ ব্যাং মোড়, শাপলা চত্তর, সেন্ট্রাল রোডস্থ মহানগর ডিবি অফিসের সামনে, সেনা চেকপোস্ট, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, মর্ডাণ মো্‌ড় পার্কের মোড়, মাহিগঞ্জ সাতমাথা, সিও বাজার, মেডিকেল পূর্ব গেট, ধাপ খ্যান্ট পাবলিক স্কুলের সামনে ও লালবাগ রেলক্রসিংয়ের সামনে। অন্যদিকে, বদরগঞ্জ ছাড়া জেলার ৭ উপজেলায় টিসিবির পণ্য বিক্রি জানুয়ারী থেকে শুরু হয়েছে। এসব উপরেজলায় মেনু্যয়াল কার্ড ছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার। এর মধ্যে স্মার্ট কার্ড এসেছে ৮৪ হাজার। সুবিধাভোগিরা খেজুরের পরিবর্তে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি করে চার পাবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে মসুর ডালের দাম প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, চিনি ১২০ থেকে ১৩০, বোতল জাত সোয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা, খেজুর ২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা ও রেছালা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও প্রতিকেজি চাল ৫৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির উপপরিচালক হাবিবুর রহমান জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে ন্যায্য মূল্যে টিসিবির ৫ পণ্য বিক্রি শুরু হলেও রংপুর সিটি করপোরেশনে এখনও কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে রমজানকে সামনে রেখে ২০ ফেব্রম্নয়ারীতে সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। স্মার্টকার্ড ছাড়াই প্রত্যেকে টিসিবি পণ্য কিনতে পারবে।