বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত পোল্ট্রি উৎপাদনের দাবি বাকৃবি গবেষকের

বাকৃবি প্রতিনিধি
  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিকমুক্ত পোল্ট্রি উৎপাদনের দাবি বাকৃবি গবেষকের

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও তার গবেষক দল উদ্ভিজ্জ নির্যাস বা নিমের নির্যাস দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক মুক্ত নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদনের দাবি করেছেন।

অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম নিজ উদ্ভাবিত নিমের নির্যাসের নাম ইঅটঝধভব-ঠবঃ. এই নির্যাস উদ্ভাবনের লক্ষ্য সম্পর্কে বলেন, পোল্ট্রি উৎপাদনকারীরা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকেন। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের দুই সপ্তাহ পর মুরগি বিক্রি করলে সাধারণত মুরগির দেহে ক্ষতিকর মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক থাকে না। কিন্তু অনেক খামারি অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের দিনেও মুরগি বিক্রির জন্য বাজারে তোলেন। এ কারণে এসব অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের দেহেও পৌঁছে যায়, যা অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সসহ বিভিন্নভাবে খাদ্য নিরাপত্তার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আর এই সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যেই ইঅটঝধভব-ঠবঃ উদ্ভাবন করা হয়েছে।

ইঅটঝধভব-ঠবঃ সম্পর্কে ড. শফিকুল বলেন, 'ইঅটঝধভব-ঠবঃ এক ধরনের সলু্যশন বা উদ্ভিজ্জ নির্যাস যা পোল্ট্রি শিল্পে অ্যান্টিবায়োটিক-মুক্ত ব্রয়লার উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করতে সক্ষম। নিম পাতার গ্রোথ প্রোমোটিং ইফেক্ট, ইমিউনো স্টিমুলেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাবসহ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এখানে শনাক্ত করা হয়েছে এবং সেই উপাদান দিয়ে এই সলু্যশন বা নির্যাস তৈরি করা হয়েছে।'

তিনি আরও জানান, 'এটি ব্রয়লারের জন্য প্রায় শতভাগ নিরাপদ। এটি দেওয়ার পর দেখা গেছে কোন রোগের উদ্ভব হয়নি অর্থাৎ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া একদমই নেই। সতর্কতা স্বরুপ মুরগিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হলেও আর কোন ওষুধ লাগে না, কারণ এসময় পোল্ট্রি কোন রোগেও আক্রান্ত হয় না।'

অধ্যাপক ড. শফিকুলের এই গবেষণা দলে আছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. আবু রায়হান পারভেজ, শাকিল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, তানভীর হাসান, নাজিবুল হক এবং আশরাফুল আলম। গবেষণাটি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের অর্থায়নে ধারাবাহিকভাবে ৭ বছর ধরে চলমান।

তাছাড়া সম্প্রতি ২০২৫ সালে ৩১তম বাংলাদেশ ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণা সমিতি (বিএসভিইআর) কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে এই গবেষণার পোস্টারটি সেরা পোস্টার উপস্থাপনার পুরস্কার অর্জন করেছে, যা গবেষণাটিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে স্বীকৃতি প্রদান করেছে বলে জানান অধ্যাপক শফিকুল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে