চালের বাজারে মোটা চাল বর্তমান ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা স্বল্প আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই তো মাঘের শীতকে উপেক্ষা করে প্রতিদিনই দরিদ্র, অসহায় ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) এর চাল নিতে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকেই ফিরছে খালি হাতে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গা মোকাবিলায় এ উপজেলায় সরকার অনুমোদিত চারজন ওএমএস ডিলার ছিলেন। তারা হলেন- বিষ্ণুপদ দাস, অহেদুজ্জামান বিশ্বাস, স্বপন মুখার্জি ও জগায় ভদ্র। এসব ডিলার পৌর শহরে সরকারের ভর্তুকি মূল্যে ওএমএস'র ৫ কেজি করে চাল জনপ্রতি বিক্রি করতেন। এদের মধ্যে স্বপন মুখার্জি মারা গেছেন। আর জগায় ভদ্র গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তনের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এদের জায়গায় নতুন কোনো ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে ২ জন ডিলার দিয়েই চলছে ওএমএস কার্যক্রম। প্রতিদিন একজন ডিলার দেড় মেট্রিক টন করে চাল বিক্রি করতে পারবেন।
ডিলার বিষ্ণুপদ দাস বলেন, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি থেকে ওএমএস কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ৩০০ জনকে বরাদ্দকৃত চাল ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি করে বিক্রি করা হয়। যে দিন বেশি মানুষ থাকে সেদিন জনপ্রতি সাড়ে ৩ কেজি করে দেওয়া হয়। প্রতিদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকে টোকেন দেওয়া হয়। যারা পায় তাদের চাল দেন। কিন্তু বরাদ্দের চেয়ে মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেকেই চাল না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। ফলে সরকারের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক দুস্থ, অসহায় পরিবার। তাদের অপেক্ষা করতে হয় পরের দিনের জন্যে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কম দামে ওএমএস'র চাল কিনতে ডিলারদের দোকানের সামনে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন। নানা বয়সী নারী পুরুষ চাল কিনতে এসেছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অনেক বৃদ্ধা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। অনেকে আশা ছেড়ে দিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন। এদের মধ্যে ভোগতি গ্রামের নওয়াব আলী, মধ্যকুল গ্রামের লুৎফর রহমান, একই গ্রামের রোকেয়া বেগম ২দিন লাইনে দাঁড়িয়ে মাত্র ৩ কেজি করে চাল পেয়েছেন। চাল নিতে আসা ভোগতি গ্রামের কাদের বলেন, স্বপন মুখার্জি আর জগায় ভর্দের জায়গায় নতুন করে ২ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হলে কিছুটা হলেও সমস্যার সমাধান হত। উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, চারজন ডিলারের কাজ দুজনকে করতে হচ্ছে বলেই ওএমএস'র দোকানে উপচে পড়া ভিড়। কেউ যাতে খালি হাতে ফিরে না যায় সেটা আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।