রাস্তার প্রসরতা বৃদ্ধি, নির্দিষ্ট পার্কিং জোন তৈরি, মহাসড়কের দুপাশে লোকাল গাড়ি চলাচলে প্রয়েজনীয় রাস্তা তৈরি। রেল পাড়াপার, হাট-বাজার, শহর ও গুরুত্বপূর্ণস্থানে আন্ডারপাস নির্মানসহ নানা ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর সিক্সলেন মহাসড়ক তৈরি হলেও পূর্বের হাল ছাড়েনি কয়েক শ্রেণির চালকরা। এছাড়াও দুইদিনের পথ কয়েক ঘন্টায় যাওয়া, নিরবিচ্ছিন্ন চলাচলের ব্যবস্থা তৈরি হওয়াসহ নানা সুবিধা পেয়েও নিজেদের জেদ ও দাম্ভিকতা ছাড়তে পারেনি এই চালকরা। বিশেষ করে ট্যাংক-লরি ও মস্তবড়-বড় ট্রাকগুলোর চালক তাদের পুরোনো অভ্যসেই রয়ে গেছে। অর্থাৎ নিজেদের সুবিধার জন্য বিন্দু পরিমান কষ্ট করা এবং ছাড় দিতে রাজি নয় তারা। এতে করে মহাসড়কে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। বিগত সময়ে স্বল্প প্রস্থের হাইওয়েতে দ্বী-মুখি যান চলাচলে অনেকটাকই ঝুকিপূর্ণ ছিল জনজীবন কিন্তু এখন ৪ গুন বেশি প্রস্থের ৪ লেন একমুখী মহাসড়ক তৈরি করেও সেই একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দ্রম্নতগামী বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোসহ নানাধরনের গাড়িগুলোকে।
ঘণ কুয়াসা, ঘুটঘুটে অন্ধকারের পথ ও তীব্র সুর্যের তাপের মধ্যেও মহাসড়কের মাঝ বরাবর দাহ্যবাহী ট্যাংক-লরি ও মস্তবড়-বড় মালবাহী ট্রাক দার করিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাপাত্তা হয়ে থাকতে দেখা যায় চালকদের। এতে করে দ্রম্নতগামী গাড়িগুলোর নিয়ন্ত্রণ সামলানো খুব কঠিন হয়ে পরে। এছাড়া প্রচন্ড তাপে দাহ্য পদার্থে আগুন ধরে যাওয়া এবং দুষ্ট লোকদের ক্ষপ্পরে আগুন ধরে গেলে মহা বিপদ নেমে আসতে পারে জনজীবনে। এসব নানাদীক চিন্তা করে বিভিন্ন সময় হাইওয়ে পুলিশ এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে ট্রাক চালকদের দাম্ভিকতা ও বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কারনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়না পুলিশের। উলেস্নখ্য ১১ ফেব্রম্নয়ারি বগুড়ার তিনমাথা রেলগেট এলাকার আন্ডার পাসের উপড়ে চট্রগ্রাম মেট্রো ঢ ৪১-৩৯৬, চট্রগ্রাম মেট্রো ঢ ৪১-০২২৫, চট্রগ্রাম মেট্রো ঢ ৪১-৫৭৩ নম্বরের তিনটি ট্যাক-লরি দাড়িয়ে থাকতে দেকা যায়। পাশেই কয়েকজন হাইওয়ে পুলিশকেও দেখা যায়। প্রায় এক ঘন্টা পরে চালক ও হেলাপাররা আসে ট্রাকে। এসময় পুলিশরা চালকদের কাছে রাস্তার উপর ট্রাক দার করে রাখার কারণ জানতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এমনকি কোন ধরনের কাগজপত্র দেখাতেও রাজি হয়নি তার। এক পর্যায়ে বিভিন্নস্থানে ফোন দেয়ার হুমকিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে চরম দুরব্যবহার করতে দেখা যায়। এসব তালবাহানার এক পর্যায়ে গাড়িগুলো নিয়ে সটকে পরে তারা। হাইওয়ের আন্ডারপাসগুলোর নিচে যেমন, মহাস্থান, বারোপুর, চারমাথা বাস টার্মিনাল, তিনমাথা রেলগেট, ফুলতলা-শাকপালাসহ উত্তরের প্রায় সবগুলো আন্ডারপাসের নিচে যত্র-তত্র গাড়ি পার্কিং ও অসংখ্যা দোকান বসানো হয়েছে। এতে করে বড় গাড়িগুলোর ইউটার্ন নেয়া কিংবা কিছুক্ষনের জন্য গাড়ি রেখে গুরুত্বপূর্ণ কোন কাজ করার অবকাশ থাকেনা। অর্থাৎ গাড়ি রাখারই কোন জায়গা থাকেনা।
গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্নস্থানে রাস্তার পাশের গ্যারেজে গাড়ি মেরামতের কাজ হাইওয়ে তথা এক্সপ্রেসওয়ের উপরেই করে থাকে। বিশেষ করে চারমাথা বাসটার্মিনাল এলাকায় এই প্রবনতা সবথেকে বেশি। একারনে রাস্তার প্রস্থতার সংকির্ণতায় ওভারটেকিং করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এবং মাঝেমধ্যেই জ্যামের সৃষ্টি হয়।
বগুড়া হাইওয়ে রিজিওনের দেয়া তথ্যানুযায়ী ২০২৪ সালে ৩০০টি সড়ক দুর্ঘনায় ২৬২ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এর মধ্যে ২১৭ জন পুরুষ, ৩৮ জন মহিলা ও শিশু রয়েছে সাত জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত ও গুরুতরো জখম হয়েছে ২৭৫ জন। এর মধ্যে ২৩৬ জন পুরুশ ২৬ জন মহিলা ও শিশু রয়েছে ১৩ জন।
এ বিষয়ে বগুড়া হাইওয়ে রিজিয়ন এর পুলিশ সুপার শহিদ উলস্নাহ বলেন। মহাসড়কে দুর্ঘটনা এরাতে এই বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি ইতিমধ্যে বিভিন্নস্থানে আন্ডারপাসের নিচে তৈরিকৃত দোকানগুলো সরিয়ে দিয়েছি এবং যত্রতত্র পার্কিং রোধে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে বিশেষ করে ট্রাক ও ট্যাংক লরিগুলো চালক ও হেলপারেরা এসবের কিছুই শুনতে চায়না। তাদের আচার আচরণও খুবিই খারাপ। বিভিন্ন সময় আমাদের অফিসারদের সাথেও চরম দুরব্যবহার করে থাকে। এই কর্মকর্তা আরোও বলেন ১১ ফেব্রম্নয়ারি তিনমাথা রেলগেট এলাকার আন্ডারপাসের উপরে কোন কারন ছাড়াই দাহ্যপদার্থ অর্থাৎ তেলবাহী গাড়িগুলো তীব্র রোদের মধ্যে অবস্থান করছে। এতে করে দ্রম্নতগামী গাড়িগুলোর নানাধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছালে তাদের সাথে খুবিই দুরব্যবহার করে। ওই ট্রাকগুলো হবিগঞ্জ থেকে দিনাজপুরে যাচ্ছিল। এমনকি গাড়ির কাগজপত্র দেখাতেও ছিল তাদের দাম্ভিকতা। এই কর্মকর্তা আরোও বলেন সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। এবং সবাইকে এগিয়ে এসে একযোগে কাজ করতে হবে।