নোয়াখালীতে ট্রাক চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্য হয়েছে। এছাড়া পাবনার সাঁথিয়া ও ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও তিনজন নিহত হয়। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
স্টা্ফ রিপোর্টার, নোয়াখালী ও সুবর্ণচর প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ট্রাক চাপায় আসমা বেগম(৭) ও মো. আরাফাত(৬) নামে দুই শিশু শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃতু্য হয়েছে। নিহতরা সম্পর্কে আপন মামাতো ফুফাতো ভাই-বোন। এ ঘটনায় নিহত শিশু আরাফাত এর বাবা আবুল কালামকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের ইসলামীয়া সড়কের বৈকন্ঠপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ভূঞা বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, একই ইউনিয়নের ন্যার্যার ভাঙতি গ্রামের সাদ্দাম হোসেন এর মেয়ে আসমা বেগম (৭) ও ফরিদাবাদ গ্রামের আবুল কালাম এর ছেলে মো.আরাফাত (৬)। তারা স্থানীয় কোয়ালিটি এডুকেশন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সকাল সোয়া ৮টার দিকে আবুল কালাম শ্বশুর বাড়িতে যায়। সেখান থেকে সাইকেল যোগে তার ছেলে আরাফাত ও শ্যালকের মেয়ে আসমাকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। সাইকেলটি উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের ইসলামীয়া সড়কের বৈকন্ঠপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ভূঞা বাড়ির দরজায় পৌঁছালে স্থানীয় নতুনহাট বাজার গামী একটি ট্রাক সেটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিশুর মৃতু্য হয়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় আবুল কালামকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এঘটনায় সুধারম মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ট্রাকটি আটক করা হলেও চালক পালিয়ে গেছেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগর ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনার সাঁথিয়ায় উপজেলায় ইট বোঝায় ট্রলির ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার ২ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এঘটনায় আরও ২ জন আহত হয়েছেন। তাদের গুরুত্ব অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের মহিষকোলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার পুকুরা পাড়া এলাকার মৃত বাদশার ছেলে মো. মামুন হোসেন (৩২) ও পাবনার আমিনপুর থানার চর কান্দি এলাকার প্রশান্ত মিস্ত্রীর স্ত্রী ননিতা রাণী (৪৫)। আহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, সিএনজিটি পাবনার কাশীনাথপুর থেকে যাত্রী নিয়ে বেড়ার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পেছন থেকে ইট বোঝাইকৃত একটি ট্রলি ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন এবং দুইজন আহত হন। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং আহতদের উদ্ধার করে পাবনার বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ট্রলিসহ ড্রাইভার ও হেলপার পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, ঈশ্বরদীতে বেপরোয়া নসিমনে পিষ্ট হয়ে সিএনজিতে থাকা ১ যাত্রী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে ঐ সিএনজির অপর ৩ যাত্রী। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১২ টার দিকে উপজেলার আলহাজ্ব মোড়স্থ বিএসআরআই প্রধান ফটকের অদূরে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আকমল হোসেন (৩৫) উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে।
আহতরা হলেন, উপজেলার রুপপুর এলাকার মজিবুল হক এর ছেলে রকিবুল হক (৪০), পুরাতন ঈশ্বরদীর ইলশামারী এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে ইসরাফিল (৩৫) এবং পৌর শহরের পাতিলাখালী এলাকার আব্দুল মজিদ এর স্ত্রী রেনু বেগম (৫০)।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশ, প্রতক্ষ্যদর্শী এবং ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানাযায়, ঘটনার সময় বড়ইচারা (আইকে রোড) থেকে দ্রম্নত গতিতে গরু বোঝাই করা একটি নসিমন দাশুড়িয়া অভিমুখে এবং দাশুড়িয়া থেকে ঈশ্বরদী অভিমুখে সিএনজি যাত্রাকালে ঘটনাস্থলে আসলে উভয়ের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির যাত্রীসহ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এসময় আশপাশের মানুষ এসে আহতদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে প্রেরণ করেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক শারিরিক পরীক্ষা শেষে আকমলকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঈশ্বরদী থানার এস আই রফিকুল ইসলাম জানান, নসিমন চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পুরো তদন্ত শেষে এবং নিহতের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।