হরিরামপুরে বই না পাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত
প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দেড় মাস হতে চললেও এখনো সব পাঠ্যবই পায়নি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা। বইয়ের অভাবে ঠিকমতো হচ্ছে না ক্লাস। বই না পাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। ব্যাহত হচ্ছে পড়াশোনা। কবে নাগাদ বই আসবে সেই নিশ্চয়তা না থাকায় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হরিরামপুরে প্রাথমিক স্তরের প্রাক্ প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সব পাঠ্যবই পেয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাত্র একটি করে পাঠ্যবই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুধুমাত্র দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রায় সবগুলো বই পেয়েছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থীই পূর্ণাঙ্গ বই পায়নি। কোনো কোনো শিক্ষার্থী ১-৩টি বই পেলেও, কোনো শিক্ষার্থী একটি বইও পায়নি। এতে হতাশা বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। ঝিট্কা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আঁখি আক্তার বলেন, আমি তিনটি বই পেয়েছি। আমাদের ক্লাসের অনেকে একটা-দুইটা করে বই পেয়েছে। অনেকে কোনো বই পায়নি। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শুভ জানায়, 'আমি শুধু ইংরেজি বই পেয়েছি। আর কোনো বই পাইনি।'
ঝিট্কা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজা সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একটি, সপ্তম শ্রেণির দুইটি এবং অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তিনটি করে পাঠ্যবই পেয়েছে। তবে, ক্লাসের সব শিক্ষার্থী বই পায়নি। যারা আগে এসেছে, ভর্তি হয়েছে তারা বই পেয়েছে। আমরা অনলাইন থেকে পিডিএফ বই ডাউনলোড করেছি। সেগুলো দিয়েই ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে।'
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, 'আমার মেয়েকে ঝিট্কা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করেছি। এখন পর্যন্ত একটা বইও দেওয়া হয়নি। বই পায়নি বলে আমার মেয়ে স্কুলেই আসতে চায়না। কবে বই পাবে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।'
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, 'চলতি বছরে শিক্ষার্থীদের দেওয়া বইয়ের মান খুবই ভালো। ভালো মানের বই সরবরাহে হয়তো কিছুটা দেরি হচ্ছে। এতে কিছুটা সমস্যাও হচ্ছে। আশা করছি শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।'
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, 'ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির দুই থেকে তিনটি করে বই পেয়েছি। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রায় সবগুলো বই পেয়েছে। আমরা চাহিদার প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ বই পেয়েছি।'