শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

ক্ষেতলালে আলুর দাম কমায় কৃষক বিপাকে

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ক্ষেতলালে আলুর দাম কমায় কৃষক বিপাকে

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলাতে ধান আর আলুর চাষাবাদ সবচেয়ে বেশি হয়। কৃষি নির্ভরশীল উপজেলা আগাম জাতের আলুর দাম না পেয়ে চরম হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। এ বছরের চিত্র আলাদা। আগাম জাতের আলুর ভরা মৌসুমে ন্যায়মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। আলু চাষ করতে গিয়ে ঋণের দায়ে জর্জরিত অনেক কৃষক।

আগাম জাতের আলু তোলা পুরোদমে শুরু,ফলন ভালো হলেও দাম কমায় লোকশানে পড়ছেন কৃষক। বিঘাপ্রতি আলুর আবাদ করতে খরচ হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৮ হাজার টাকা। প্রতিবিঘাতে আলুর ফলন হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ মণ। বর্তমান আগাম জাতের আলুর বাজার দর মিউজিক ৩৭০, ইষ্টিক ৩৫০,বার তেরো ৩৮০,ক্যারেজ ৩৮০, ডায়মন্ড ৩৭০, সানসাইন ৩৮০,গ্যানোলা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে কৃষককে।

কৃষকরা সুষ্ঠু বাজার মুনিটরিং এর দাবি করেছেন। আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারের ফি কমানোর উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানান। কিছু কৃষক আগাম জাতের আলু তোলা শুরু করেছে ভরা মৌসুম না আসতেই বাজারে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের বাখেরা কমল গাড়ি গ্রামের কৃষক ইমাম আলী বলেন, আমি ৬ বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করে লোকশান গুনতে হয়েছে। খরচ হয়েছে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা আর আলু বিক্রি হয়েছে ১৬০ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার আগাম জাতের আলু লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৯৮০ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৯২২০ হেক্টর জমিতে। উপজেলার তুলশীগঙ্গা ইউপির ঘুগইল গ্রামের কৃষক হারুনুর রশিদ বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করে প্রতি শতাংশে আলু পাচ্ছি দুই থেকে আড়াই মণ। আলুর দাম ৫শ' টাকার নিচে আসলে কৃষক মরে শেষ।

পৌর এলাকার ভাসিলা গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, 'আমি ৪ বিঘা জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেছি। এবছর আলু চাষ করতে অনেক বেশি খরচ হয়েছে। ফলন কম দামও কম এ অবস্থা থাকলে কৃষকেরা বিপাকে পড়বেন।' পৌর এলাকার ভাসিলা গ্রামের আহমেদ আলী বলেন, 'আমি ২৩ বিঘা আলু চাষ করেছি হিসাবে দেখছি ১০ থেকে ১৫ হাজার বিঘা প্রতি লোকসান গুনতে হবে।আর এ দাম থাকলে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক।' উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান বলেন, আগাম জাতের আলু চাষ লাভজনক হওয়ায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আগাম জাতের আলু চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন এ উপজেলার কৃষকরা। কিন্তু আলুর ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষক আগামীতে এ উপজেলায় আলু চাষে আগ্রহ কমে যাবে বলেও জানান কৃষি কর্মকর্তা। আলুর রোগ প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে