কিশোরগঞ্জের হাওড় অধু্যষিত উপজেলা অষ্টগ্রামে কাজ না করেই কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন এবং এ টাকা উত্তোলনে সহযোগিতা করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা (পিআইও) মজনু মিয়া।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে সারা উপজেলা জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
অন্যদিকে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
লিখিত অভিযোগ ও পিআইও কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের অধীনে উপজেলা খয়েরপুর-আব্দুলস্নাহপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মোলস্না বাড়ির মসজিদ থেকে জলিল মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত গ্রামীণ মাটির ভরাট ও সংস্কারের জন্য ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এ টাকা উত্তোলন করা হলেও সেখানে মাটি ভরাটের কাজ হয়নি। এ নিয়ে গত বছরের ২১ অক্টোবর এলাকার শরিফ উদ্দিনের ছেলে ফারুক আহাম্মেদ নামের একব্যক্তি ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারি ফারুক আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বরং একই জায়গায় আবার নতুন করে প্রকল্প নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এটি সরকারি অর্থ অপচয় বলে মনে করেন অভিযোগকারী ফারুক।
প্রকল্পের সভাপতি হোসেন আহামেদ বলেন, এ কাজটি হয়েছে ৪নং ওয়ার্ডে। কিন্তু এখানে অন্য ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের মাধ্যমে প্রকল্প জমা দিয়ে কাজটি পাস করান ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তারা কমিটিতে আসার আগেই কিছু কাজ করে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তুলে নিয়ে যান। পরবর্তী পিআইও অফিস থেকে বিল তুলতে মোট বিলের ১০ শতাংশ দিতে হয়।
জানতে চাইলে প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম জানান, 'সভাপতিকে নিয়ে আমরা চেকে স্বাক্ষর করে পিআইও'র কাছে দিয়ে আসি।'
ইউএনও দিলশাদ জাহান এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর প্রকল্পের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অফিসে এসে আরও একটি লিখিত দিয়ে গেছেন। পিআইও'কে দেখার জন্য বলেছিলাম।
তবে সভাপতি ও সম্পাদকের দেওয়া কাগজটিতে কি লেখা রয়েছে সেটি এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। তাছাড়া ওই জায়গায় নতুন কোন প্রকল্প নেওয়া হয়নি। জায়গাটিতে ইটের সোলিং করা হবে।'
পিআইও মজনু মিয়া বলেন, এখানে শতভাগ কাজ হয়েছে। এ বিষয়ে সভাপতি ও সম্পাদক লিখিত দিয়েছেন। তবে তার এখানে কাজ করলে ১০ শতাংশ টাকা দিতে হয় এমন অভিযোগ এ কর্মকর্তা অস্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. বদরুদ্দোজা বলেন, 'আমি কিশোরগঞ্জে নতুন যোগদান করেছি। তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখব।'
উলেস্নখ্য, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মজনু মিয়া গত ২০ জুলাই ২০২৩ সালে অষ্টগ্রামে যোগদান করেন।