শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে মহারশি পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির উদ্যোগে ও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে জমির জলাবদ্ধতা নিরসন করা হয়েছে। এতে ফলে এবার দুই উপজেলায় ৬শ' করে ১২শ' একর জমি চাষের আওতায় এসেছে। ফলে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি জানান, শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার রাবার ড্যাম মহারশি পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোগে এবার ৬ একর জমি ইরি বোরো আবাদের আওতায় এসেছে। ২০১৩ সালে সমিতি স্থাপিত হয়ে পাহাড়ি এলাকায় কৃষকরদের পানি সংকট সমাধান করে আসছেন সমিতির সদস্যরা।
এবার সাবেক কমিটির মেয়াদ ও নিয়মিত এজিএম না করার দায়ে উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন কমিটি দায়িত্বভার নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাঁধ ২ লাখ টাকা ব্যয়ে আবাদের জন্যে মেরামত করেন। জাইকা প্রবল্পের মাধ্যমে ৩টি পানির হাউজ তৈরি করার ফলে যার মাধ্যমে অতিতের রেকর্ড ভেঙে এবার ৬শ' একর জমি ইরি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন কমিটির সভাপতি ফজলুল করিম ও অন্যান্য সদস্যরা জানান, 'আমরা দায়িত্ব নিয়ে কৃষকের কথা চিন্তা করে সমিতির অর্থায়নে একটি বাঁধ র্নিমাণ করেছি। জাইকার ৩টি পানির হাউজ নতুন করে এবারের ইরি বোরো আবাদে চালু করা হবে। এর ফলে ৬শ' একর জমি ইরি বোরো চাষাবাদের আওতায় আসবে। রাবার ড্যামটি ৩ হাজার একর জমিতে পানি দেওয়ার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে ওই সময়ে স্থাপন করা হয়েছে।
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, মিরসরাইয়ে মহামায়া সেচ প্রকল্পের পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল স্থানীয় তালবাড়িয়া ওয়ার্লেস এলাকায়। সেখানকার লোকজনের বিরুদ্ধে খালের মধ্যে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। যার কারণে মিরসরাই পৌর এলাকা ৫০০ থেকে ৬০০ একর কৃষি জমিতে পানির অভাবে ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছিল। পরে এই সমস্যা নিয়ে কৃষকরা স্থানীয় যুবদল নেতা রিয়াদ হোসেনের দারস্থ হন। যুবদল নেতা রিয়াদ স্বউদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে খালের মধ্যে দেওয়া বাঁধ সরিয়ে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক করে দেন। এতে খালের পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়। এতে হাসি ফুটেছে দিশেহারা কৃষকের মুখে।
কৃষকরা জানান, বিষয়টি স্থানীয় যুবদল নেতা রিয়াদ হোসেনকে জানালে তিনি স্বউদ্যোগে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তিনি কৃষকদের নিয়ে মহামায়া সেচ প্রকল্পের পানি উজানে বাঁধ কেটে পানির প্রবাহ ঠিক করে দেন। এতে খালের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রূপ নেয়।
স্থানীয় যুবদল নেতা মোহাম্মদ রিয়াদ হোসেন বলেন, 'মিরসরাই পৌরসভা এলাকার প্রায় আড়াইশ কৃষক পানির অভাবে বোরো ধান চাষ করতে পারছিলেন না। আমি স্থানীয় নেতা জাহিদ ভাইয়ের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করি। এখন খালে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক থাকায় কৃষকদের বোরো চাষ করতে আর কোনো অসুবিধা থাকবে না।'
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, শুষ্ক মৌসুমে উজানের কৃষকরা খালে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে নিজেদের জমি চাষ করেন। এতে করে দূরবর্তী এলাকার কৃষকদের পানি পেতে অসুবিধা হতো। তবে সেটি সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। খালের পানি প্রবাহ এখন স্বাভাবিক রয়েছে।