শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২
কারাগারে সাবেক এমপি পিন্টুর মৃতু্য

রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী অফিস
  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কারাগারে থাকা অবস্থায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃতু্যর ঘটনায় রাজশাহীর আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনকে।

বুধবার দুপুরে প্রয়াত বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর ভাই নাসিম আহমেদ রিন্টু (৫০) বাদি হয়ে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। আদালতে তাঁর পক্ষে আইনজীবী আবদুল মালেক রানা মামলাটি উপস্থাপন করেছেন। আদালতের বিচারক আল আসাদ মোহাম্মাদ আশিফুজ্জামান মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

আদালতে রিন্টুর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পূর্নবাসন বিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইটসহ দলের নেতাকর্মীরা গিয়েছিলেন।

আইনজীবী আবদুল মালেক রানা জানান, মামলার আরজিতে আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকার সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আসাদুজ্জামান কামাল, আনিসুল হক, হাজী মো. সেলিম, সোলায়মান সেলিম, ইরফান সেলিম, মনির হোসেন ওরফে কোম্পানি মনির ওরফে স্প্রিট মনির ও এএস শরিফ উদ্দিন ওরফে বস্ন্যাক শরিফ।

এছাড়াও তৎকালীন আইজিপি, তৎকালীন আইজি প্রিজন, তৎকালীন ঢাকা ও রাজশাহীর ডিআইজি প্রিজন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার শাহাদত হোসেন, কারা চিকিৎসক আবু সায়েম, কয়েদি রাব্বানী ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু কাহার আকন্দের নাম রয়েছে তালিকায়।

আইনজীবী আবদুল মালেক রানা জানান, 'আদালতে মামলার আরজি জমা দেওয়ার বিচারক আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আদেশ দেননি। তবে বিকেলে অভিযোগটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।'

ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকার লালবাগ-কামরাঙ্গীরচর চর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নাসির উদ্দিন পিন্টু। পরে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হন। পিলখানা হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছিল। এ ছাড়া একটি অস্ত্র লুটের দায়ে তার ১০ বছরের কারাদন্ড হয়েছিল। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছিলেন। তবে আদালতে সাজা হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। নির্বাচন করতে পারেননি।

নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পিন্টুকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কয়েক দিন পরে তিনি অসুস্থ বোধ করলে ২৬ এপ্রিল তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়। পরে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চিঠি দিয়ে কারাগারে চিকিৎসক ডাকা হয়। চিঠি পেয়ে একজন চিকিৎসক গেলেও তাকে কারাগারে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ২০১৫ সালের ৩ মে দুপুরে কারাগার থেকে পিন্টুকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ কারণে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃতু্য (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ৭ (১) ধারামতে আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়েছে।

নাসির উদ্দিন পিন্টুর ভাই নাসিম আহমেদ রিন্টু বলেন, 'আমার ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ও বিএনপির প্রতি তার অবদানকে ভয় পাচ্ছিল হাসিনা সরকার। তাই তাকে পরিকল্পিতভাবে পিলখানা মামলায় ফাঁসিয়ে সাজা দেওয়া হয়। এরপর কারাগারে নিয়ে হত্যা করা হয়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে