সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে প্রাণচাঞ্চল্য। কারা হচ্ছেন ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির কান্ডারি এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। আহবায়ক কমিটিতে থাকতে আগ্রহীরা জেলা নেতৃবৃন্দের আনুকূল্য পেতে চালিয়ে যাচ্ছেন নানা ভাবে তদবির।পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপত্তিসাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী নেতৃবৃন্দের মধ্যেও চলছে নানামুখী তৎপরতা।
তবে আহবায়ক কমিটি ও পরবর্তী পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বিতর্কিতদের নেতৃত্ব দেখতে চান না তৃণমূল নেতা্তকর্মী থেকে শুরু করে দলের জেলার নীতিনির্ধারণী মহল। ধর্মপাশা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিএনপি ও অংঙ্গসংগঠনের সাধারণ কর্মী্তসমর্থকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা তৃণমূল কর্মীবান্ধব ও ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব চান দলের প্রতিটি ইউনিটে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যেই ধর্মপাশা উপজেলায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের জন্য গেল ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয় ফরম বিতরণ ও জমা দেবার কাজ। জেলা বিএনপিথর উদ্যোগে উৎসবমুখর পরিবেশে সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্টেশনের দলীয় কার্যালয় থেকে ফরম সংগ্রহ করেছেন ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক পদ প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ।
উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে আহ্বায়ক পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ৪ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- লিয়াকত আলী, ইকবাল হোসেন মন্টু, নুরুল ইসলাম, আফসার আলম পীর, কাজী মাজহারুল হক। এছাড়া প্রথম যুগ্ম আহবায়ক পদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৯ জন।
তারা হলেন- এসএম রহমত, ফারুক আহমদ, চন্দন খান, মজিবুর রহমান মজুমদার, সাইফুর রহমান কাঞ্চন, আব্দুল হক, মো. আলমগীর, এসএম কালাম আজাদ, সোহেল মিয়া। যুগ্ম আহবায়ক পদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৩৩জন তারা হলেন- আফজাল হোসেন স্বপন, কবির মিয়া, জুলফিকার আলী ভুট্ট, মো. জাহাঙ্গীর, সামছুল আলম, উজ্জ্বল মিয়া, মিশর আহমদ, আলামীন মিয়া, রোমান মিয়া, হামিদুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুল মন্নাফ, আবুল বাশার, জুলফিকার আহমদ ভট্টু, হারুনুর রশীদ সরকার, হাদিস মিয়া, মোহাম্মদ আলী, জিএম মমতাজুর রহমান কাজল, মোঃ সালাউদ্দিন, আপ্তাব উদ্দিন আহমদ, গোলাম মোস্তফা, মাহবুব মোর্শেদ, নেহাল উদ্দিন, মুশফিকুর রহমানসহ অন্যরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ৩০ নভেম্বর জেলা বিএনপির উদ্যোগে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে ধর্মপাশায় বর্ধিত কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তৃণমূল নেতৃবৃন্দের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার ১২ উপজেলায় বর্ধিত কর্মী সমাবেশগুলো শেষ হলে উপজেলাওয়ারী আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক পদপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে উপজেলা আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে।এরপর উপজেলা আহবায়ক কমিটি ইউনিয়নে আহবায়ক কমিটি গঠন করবে এবং ইউনিয়ন কমিটি ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে। এরপর ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দের ভোটে ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ কমিটি, ইউনিয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দের ভোটে উপজেলা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, কমিটিতে আহ্বায়ক যিনি হবেন, তিনি ওই ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। তবে তাকে সম্মানিত সদস্য পদে রাখা হবে।
ধর্মপাশা উপজেলায় আহ্বায়ক পদে মনোনয়ন সংগ্রহকারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি আফসার আলম চন্দ্রন পীর বলেন, 'জন্মলগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছি। দুঃসময়ে দলের জন্য নির্যাতন্তনিপীড়নের শিকার হয়েছি, তবুও দলের হাল ছাড়িনি। আমার এখন বয়স হয়েছে, তরুণেরা দলের নেতৃত্বে আসবে। আহবায়ক কমিটির দ্বায়িত্ব পেলে কর্মীবান্ধব, স্বচ্ছ ও ত্যাগী নেতৃত্বের হাতে ধর্মপাশা বিএনপিকে তুলে দিতে চাই।'
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, 'ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপিথর আহবায়ক কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিগত সময়ে মামলা-হামলায় নির্যাতিত, ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজের নেতৃবৃন্দকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে যদি কারো বিরুদ্ধে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার মতো অপকর্মের অভিযোগ থাকে তখন সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। বিতর্কিত নেতা যতবড় ত্যাগীই হোন না কেন তাকে নেতৃত্বে এনে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা যাবে না।'